বাংলাদেশে ক্যান্সারসহ অন্যান্য অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধের জন্য শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের বিকল্প নেই। সোমবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য সচিব লোকমান হোসেন মিয়ার সঙ্গে বৈঠকে একথা বলেন ভারতের প্রখ্যাত ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. বিশাল রাও।
ডা. রাওয়ের নেতৃত্বে হেলথকেয়ার গ্লোবাল এন্টারপ্রাইজ (এইচসিজি)-এর একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফরে এসেছে। ক্যান্সারের ঝুঁকিতে থাকা বিভিন্ন দেশে সচেতনতামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মতবিনিময় করছে।
বাংলাদেশে ক্যান্সারের চিকিৎসা ও প্রতিরোধের নানা দিক নিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও বৈঠক করেছে এইচসিজি প্রতিনিধিদল।
বৈঠকে বিশাল রাও বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে ক্যান্সারের ঘটনা ব্যাপকভাবে বাড়বে বলে আশঙ্কা রয়েছে। একদিকে তামাক এবং মদ্যপান, অন্যদিকে খাদ্যদ্রব্যে নানা রাসায়নিক, কীটনাশক ব্যবহার ও ভেজাল- এই দুই কারণে ক্যান্সার মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই মহামারিকে ঠেকাতে এখন থেকেই সম্মিলিত উদ্যোগ ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
আর এজন্য সবচেয়ে জরুরি হলো:
১. বিশ্বব্যাংকের সুপারিশ অনুসারে কর বাড়িয়ে তামাকজাত দ্রব্যের দাম বাড়ানো। যাতে এর ব্যবহার কমে এবং অতিরিক্ত রাজস্ব ক্যান্সার সনাক্তকরণ এবং চিকিৎসার মানবৃদ্ধির পিছনে ব্যয় করা যায়;
২. বিক্রয়স্থলে বিভিন্ন ধরনের তামাকজাত দ্রব্যের (যেমন- বিড়ি-সিগারেট, ধোঁয়াবিহীন তামাক) প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা;
৩. পাবলিক প্লেস, হোটেলে ধূমপান নিষিদ্ধ করা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১০০ গজের মধ্যে তামাকদ্রব্য বিক্রি ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করা; এবং
৪. ই-সিগারেট ও অনুরূপ ইলেকট্রনিক ডিভাইস বিক্রয় ও তৈরিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা।
বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করার মাধ্যমে এই বিধিনিষেধ জোড়ালোভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব বলে সভায় মত দেন বক্তারা।
বৈঠকে স্বাস্থ্য সচিব লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন। তার এই ঘোষণাকে সর্বাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়নে কাজ করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের কাজ শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।