রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক আফরোজা সরকারসহ ৫ সাংবাদিকের ওপর বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছে নারী সাংবাদিক সংঘ (নাসাস)।
তৃণমূল পর্যায়ে কর্মরত নারী গণমাধ্যকর্মীরা কতটা নিরাপত্তাহীন ক্লাবের অভ্যন্তরে প্রকাশ্যে এই হামলায় সেই দু:খজনক চিত্রই ফুটে উঠেছে।
এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে হামলায় জড়িত সকলের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার নিশ্চিতের জোর দাবি জানিয়েছে নারী সাংবাদিক সংঘ নাসাস।
গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখ বিকেলে রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের পূর্ব ঘোষিত দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভা শেষে কিছু বহিরাগত সন্ত্রাসী এসে অতর্কিত হামলা চালায় ।এসময় তারা ক্লাবের সদস্যদেরকে মারধর করতে শুরু করে। এতে ক্লাবের ৫ জন সদস্য আহত হন। আহতদের মধ্যে ক্লাবের নবনির্বাচিত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজম পারভেজ ও সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক আফরোজো সরকারের অবস্থা গুরুতর। তারা বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হামলাকারীরা এসময় চেয়ার, টেবিল, ফ্যানসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করে।
নারী সাংবাদিক সংঘ নাসাসের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পেশাদারিত্বের জায়গায় নারীরা বরাবরই নানা বৈষম্যের শিকার। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে সামন্তীয় আচরণ, নিরাপত্তার অভাব এবং অর্থনৈতিকসহ নানা বৈষম্যের মধ্য দিয়ে সাংবাদিকতার মতো একটি চ্যালেঞ্জিং পেশায় নারীরা টিকে থাকার চেষ্টা করছে। সেখানে নারী সাংবাদিকের উপর হামলা করে তার শ্লীলতাহানি করার চেষ্টা,পিটিয়ে জখম করা এটি বর্বরোচিত এবং ঘৃণ্য অপরাধ। এটি প্রমাণ করে যে, সাংবাদিকতায় নারীদের প্রবেশে বাঁধাগ্রস্ত করার পাশাপাশি স্বাধীন সাংবাদিকতার পথকে রুদ্ধ করার একটি ষড়যন্ত্র।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য যেসব ক্লাব গঠন করা হয়, দুঃখজনকভাবে সত্যি যে ক্লাবগুলোতে বিভিন্ন গ্রুপিং করা হয়। যেখানে নিউজ চর্চা করার থেকে হুইসপারিং বেশি করা হয়। ক্ষমতা আর অর্থের লোভে পদ পাওয়ার জন্য আজকাল গণমাধ্যমকর্মীগণ বিভিন্ন ধরনের হিংস্রতার আশ্রয় নেয়। যার ফলশ্রুতিতে ঘটে নানা ধরনের হামলা। গণমাধ্যমকর্মীগণ মূল কাজ থেকে সরে গিয়ে ক্ষমতা লাভের মধ্য দিয়ে বর্তমান ব্যবস্থায় টিকে থাকার জন্য যা না তাই করে বসে। এ ধরনের চর্চা থেকে বেড়িয়ে আসা উচিত সকলের। সাংবাদিক আফরোজাসহ ক্লাবের ভেতর অন্যান্যদের উপর যে হামলা করা হলো তা ন্যাক্কারজনক একটি ঘটনা।
প্রশাসনের কাছে আহবান সাংবাদিক আফরোজাসহ সকল আহত সাংবাদিকদের চিকিৎসার খরচ বহন করাসহ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।