সুনামগঞ্জে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার হওয়া ঝুমন দাস কারামুক্ত হয়েছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জ কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।
হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার অপরাধে পুলিশের করা মামলায় ছয় মাসের বেশি সময় কারাগারে ছিলেন ঝুমন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঝুমন দাসের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুনামগঞ্জ কারাগারের জেল সুপার মো. শরীফুল আলম।
এর আগে ঝুমন দাসকে এক বছরের জন্য জামিন দেন হাইকোর্ট। এ সময়ের মধ্যে তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না বলে আদেশ দিয়েছেন আদালত। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ২৩ সেপ্টেম্বর এ আদেশ দেন।
জামিনের আদেশ মঙ্গলবার বিকেলে সুনামগঞ্জ আদালতে আসে। এরপর জামিননামা অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দাখিল করলে আদালত তা কারাগারে পাঠায়। সন্ধ্যায় জামিনের আদেশ কারাগারে পৌঁছালে মুক্তি পান ঝুমন দাস। কারাগার থেকে বেরিয়ে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
গত ১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে শানে রিসালাত সম্মেলন নামে একটি সমাবেশের আয়োজন করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। এতে হেফাজতের তৎকালীন আমির জুনায়েদ বাবুনগরী ও যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বক্তব্য দেন। ওই সমাবেশের পরদিন ১৬ মার্চ মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন দিরাইয়ের পার্শ্ববর্তী উপজেলা শাল্লার নোয়াগাঁওয়ের যুবক ঝুমন দাস। তিনি স্ট্যাটাসে মামুনুলের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অভিযোগ আনেন। তবে এ সমালোচনাকে ইসলামের সমালোচনা বলে এলাকায় অপপ্রচার চালাতে থাকে মামুনুলের অনুসারীরা। এতে এলাকাজুড়ে উত্তেজনা দেখা দেওয়ায় নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দারা ১৬ মার্চ রাতে ঝুমনকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
কিন্তু পরের দিন কয়েক হাজার লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে মিছিল করে গ্রামের সংখ্যালঘুদের ঘর-বাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা ঝুমন দাসের বাড়িসহ হাওরপাড়ের হিন্দু গ্রামের প্রায় ৯০টি বাড়ি ও মন্দিরে ভাঙচুর-লুটপাট করে। এরপর গত ২২ মার্চ ঝুমন দাসের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। এই মামলায় কয়েক দফায় জামিন আবেদন খারিজের পর ঝুমন দাসের পরিবার হাইকোর্টে জামিন আবেদন করে।