চালের মূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার ধান মজুত সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। সারা দেশে ২০০ সাইলো নির্মাণ ছাড়াও খাদ্যগুদামগুলো মেরামত করে এ সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে উল্লেখ করে এসময় তিনি কৃষক ও ভোক্তার জন্য ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে প্রাইস কমিশন (মূল্য কমিশন) গঠনের ওপর গুরত্বারোপ করেন।
বৃহস্পতিবার তার সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ আয়োজিত ‘খাদ্য উৎপাদন, আমদানি এবং বাজার পরিস্থিতি: প্রেক্ষিত খাদ্য অধিকার’ শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, বাজার মনিটরিংয়ের প্রধান ভূমিকা পালন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। খাদ্য মন্ত্রণালয়ও মনিটরিং করে থাকে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের মূল ভূমিকা সরকারিভাবে কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা এবং খাদ্য সরবরাহ সচল রাখা, বিশেষত সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির ক্ষেত্রে।
তিনি বলেন, সরকার প্রকৃত কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনে, মধ্যস্বত্বভোগীদের খাদ্য গুদামে প্রবেশাধিকার নেই। মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্মরোধে ফুড গ্রেড লাইসেন্স দিচ্ছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। কেউ অবৈধ মজুদ করলে তাকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের মুনাফার প্রতি অতিলোভের কারণে মাঝে মাঝেই মূল্যবৃদ্ধি ঘটে থাকে। মূল্য কমিশন গঠন করা হলে ব্যবসায়ীদের এ প্রবণতা কমে যাবে। অবৈধ মজুমদারদের কারসাজিরোধকল্পে বিদেশ থেকে চাল আমদানি করা হয় বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ন্যায্যমূল্য পাওয়া কৃষকের অধিকার। কৃষিখাতকে ডিজিটালাইজ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কৃষকরা অ্যাপ ব্যবহার করছে। সবাইকে অ্যাপের আওতায় আনা গেলে উৎপাদনের সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে এবং বাজার নিয়ন্ত্রণেও তা সহায়ক হবে। গত দুই বছর কৃষক ধানের নায্যমূল্য পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার কৃষিবান্ধব, এ সরকারের সময়ে কৃষি গবেষণায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ ও পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের দেশীয় অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ। ভার্চুয়াল এই ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সাহানোয়ার সাইদ শাহীন। খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী-ওয়েবিনার সঞ্চালনা করেন।
ওয়েবিনারে খাদ্য ও কৃষি বিশেষজ্ঞ, গবেষক, উন্নয়নকর্মী ছাড়াও খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন জেলার নেতৃবৃন্দ ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।