বরুড়া প্রতিনিধি : কুমিল্লার বরুড়া উপজেলায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতনের শিকার মোসা: সালমা আক্তার (২০)। তিনি চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল গ্রামের হেদায়েত উল্যাহর কন্যা। এ ঘটনায় বাদী সালমা আক্তার বাদী হয়ে চাঁদপুর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতে দুটি মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামী কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার তলাগ্রাম (খন্দকার মঞ্জিল) এর সাব্বির আহাম্মেদ খন্দকারের পুত্র মো: জোবায়ের আহাম্মেদ খন্দকার। এছাড়াও স্বামী জোবায়ের আহাম্মেদ খন্দকারের বিরুদ্ধে চাঁদপুর বিজ্ঞ আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনেও মামলা করেন। এদিকে জোবায়ের আহাম্মেদ খন্দকারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী হলেও প্রায় চার মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও আসামী গ্রেফতার হয়নি। মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ১২ ডিসেম্বর ২০১৯ সালে জোবায়ের আহাম্মেদ খন্দকারের সঙ্গে মাদ্রাসার মেধাবী শিক্ষার্থী সালমা আক্তারের ২২ লাখ টাকার দেন মোহর এবং ৫লক্ষ টাকা উসুলে বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিয়ের সময় কনের পিতা মো: হেদায়েত উল্যাহ স্বর্ণালংকার এবং যাবতীয় ফার্নিচারসহ প্রায় ১২ লাখ টাকার মালামাল প্রদান করে এবং বরের পিতা মাতা ভাই বোনদের প্রায় ৪ লাখ টাকার কাপড়-চোপড় ও বিভিন্ন অলংকার প্রদান করে। বিয়ের সময় কনেকে সাজানী বাবদ ৩০ হাজার টাকা জিনিসপত্র প্রদান করে। বিবাহের তিন চার মাস পার না হতেই যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে চাপ দিতে থাকে জোবায়ের। যৌতুকের দাবিতে একাধিকবার শারীরিক নির্যাতনও করে নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে বিভিন্ন সময় স্বামীকে টাকাও দিয়েছেন সালমা আক্তার। যৌতুক লোভী জোবায়ের দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠে। যৌতুকের টাকার জন্য স্ত্রীর উপর অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। যৌতুকের জন্য গত ৫/৯/২০২০ইং তারিখ জোবায়েরের পিতা-মাতার কু-প্ররোচনায় স্ত্রী নিকট ব্যবসায়ের জন্য ১০ লাখ টাকা যৌতুক এনে দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। অন্যথায় জোবায়ের অন্য স্থানে মোটা অংকের যৌতুক নিয়ে বিয়ে করার হুমকি ধমকি ও ভয় দেখিয়ে স্ত্রী সালমার নিকট হতে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে তাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। পরবর্তীতে স্থানীয়ভাবে সালিশী দরবার করে স্ত্রীকে পুনরায় স্বামী বাড়িতে নিয়ে এসে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করতে থাকে। গত ১১/১০/২০২০ইং তারিখ রাত ১২টার সময় স্ত্রীর নিকট পুনরায় ১০ লাখ যৌতুক দাবী করলে স্ত্রী সালমা পিত্রালয় থেকে টাকা এনে দিতে পারবে না বলে অপারগতা প্রকাশ করলে জোবায়ের স্ত্রীর তলপেটে লাথি মেরে মারাত্মক আহত করে রক্তাক্ত করে। এ সময় স্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার গলা চেপে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার চেষ্টা করলে বহু কষ্টে রক্ষা পায়। এ সময় তার মাথার তালুতে এবং ঘাড়েসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে পিটিয়ে, লাথি, ঘুষি মেরে মারাত্মক আহত করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। পরে আহত অবস্থায় সালমা অতিকষ্টে বাবার বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি তাদেরকে জানায়। পরে ১২/১০/২০২০ইং তারিখ স্ত্রী সালমার বাবার বাড়িতে এক সালিশী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে পুনরায় যৌতুকলোভী স্বামী জোবায়ের ১০ লাখ টাকা যৌতুক না দিলে স্ত্রী সালমাকে স্বামীর বাড়িতে স্থান পাবে বলে চলে যায়। পরে ১৩/১০/২০২০ইং তারিখ চাঁদপুর সদর হাসপাতালে অসুস্থ সালমা চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে চাঁদপুর আদালতে ২টি মামলা দায়ের করে। মামলার বাদী সাংবাদিকদের বলেন আমি বিয়ের পর থেকে অনেক নির্যাতন করেছে আমি মাদ্রাসায় পড়ার কারনে অনেক কিছু মুখ বুজে সহ্য করেছি আমার স্বামী আমার বিয়ের পর থেকে এক বছরের মাথায় কোন একটি জামা জুতা পর্যন্ত কিনে দেয়নি এমনকি আমার শোবার ঘরে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে আমাকে মনিটরিং করত, তার সাথে তার চাচাতো বোনের সম্পর্ক ছিল আমার বিয়ের আগে এমন কি বিয়ের পরেও ঐ মেয়ের সাথে লম্পট জোবায়েরের সম্পর্ক চলমান ছিল আমার বাবার বাড়িতে কথা বলার কথা বলতে আমার মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়, বর্তমানে আমার শ্বশুর আমাদের গ্রাম ও আশেপাশের লোকজনের কাছে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করে বেড়াচ্ছে মামলা উঠিয়ে নিতে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছে এ অবস্থায় আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছি বর্তমান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মন্ত্রী নিকট দৃষ্টি আকর্ষণ করছি শীঘ্রই জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনতে।