জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের সুপারিশ করেছেন সংসদ সদস্যসহ বিশেষজ্ঞরা। ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন কর্তৃক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর পরিচালিত ই-সিগারেট ব্যবহার বিষয়ক গবেষণার ফলাফল নিয়ে আলোচনাকালে তারা ই-সিগারেটসহ সকল ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্ট উৎপাদন, আমদানি-রপ্তানি, প্রচারণা-বিজ্ঞাপণ, বিপণন ও সেবন নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে।
সোমবার জাতীয় প্রেসকাবের আবদুস সালাম হলে গবেষণার ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ। আলোচনায় অংশ নেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. আবদুল আজিজ, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের লিড পলিসি এডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, মানসের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ডা. অরূপ রতন চৌধুরী প্রমূখ। গবেষণার ফলাফল উপস্থাপনা করেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র লেকচারার ডা. মোহাম্মদ হায়াতুন নবী।
আলোচনাকালে সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. আবদুল আজিজ বলেন, তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার স্বাস্থ্য, জাতীয় অর্থনীতি ও পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। কার্যকর তামাক নিয়ন্ত্রণের লক্ষে সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন, আইন বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি এটি কার্যকর করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ডা. অরূপ রতন চৌধুরী বলেন, ভারত, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ডসহ প্রায় ৫০টি দেশ ই-সিগারেট উৎপাদন, আমদানি বা রপ্তানি, পরিবহন, বিক্রি, বাজারজাতকরণ, মজুদ এবং এ সংক্রান্ত সবধরণের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করেছে। বাংলাদেশেও দিন দিন ই-সিগারেটের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। একারণে এখনই সময় জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় নিয়ে ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করতে হবে।
গবেষণার ফলাফল তুলে ধরে বলা হয়, তরুণ-তরুণীদের অনেকে স্টাইলের কারণে ই-সিগারেট গ্রহণ করেন। অনেকে মনে করেন, ই-সিগারেট তাদের প্রচলিত সিগারেট ছাড়তে সাহায্য করতে পারে। আবার ই-সিগারেটকে প্রচলিত সিগারেটের তুলনায় স্বাস্থ্যের জন্য কম ক্ষতিকর বলেও কেউ কেউ মনে করেন। প্রথমে ই-সিগারেট সেবনের সময়, বেশিরভাগই এতে নিকোটিন আছে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত ছিলেন না বলেও গবেষণায় উঠে এসেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩ জন ই-সিগারেট সেবনকারী ছাত্রের ওপর পরিচালিত জরিপে জানা যায়, অংশগ্রহণকারীরা ই-সিগারেটের সম্ভাব্য স্বাস্থ্যের ক্ষতি সম্পর্কে সচেতন ছিলেন না। তাদের অধিকাংশই বিশ্বাস করতেন, ই-সিগারেট স্বাস্থ্যের কম ক্ষতি করে। প্রচলিত সিগারেটের তুলনায় ই-সিগারেটে নিকোটিন কম থাকে। অংশগ্রহণকারীদের নিকোটিন সম্পর্কে মিশ্র ধারণা ছিল। বেশিরভাগ শিক্ষার্থী বন্ধুদের সাথে প্রথম ই-সিগারেট সেবন করেছিল বলে জানিয়েছে।