আলোচিত যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামিমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রায় সোয়া ৬ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মামলায় দুদকের দেয়া চার্জশিট গ্রহণ করেছেন আদালত।
বুধবার ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশ আসামিদের উপস্থিতিতে এ চার্জশিট গ্রহণ করেন।
একই সঙ্গে এ মামলায় আগামী ৮ নভেম্বর চার্জ শুনানির দিন ধার্য করে মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এ বদলির আদেশ দেন। পরে আদালতে দুদকের পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
প্রায় সোয়া ৬ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মামলায় গত বছর ৪ আগস্ট দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সংস্থার উপ-পরিচালক শাহীন আরা মমতাজ বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলায় পাপিয়ার বিরুদ্ধে মোট ৬ কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওয়েস্টিন হোটেলের ২৫টি রুমে অবস্থান করে রুম-নাইট, রেস্টুরেন্ট (খাবার), রেস্টুরেন্ট (মদ), স্পা, লন্ড্রি, মিনিবার ফুড, মিনিবার বাবদ মোট তিন কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৬১ টাকার বিল ক্যাশে পরিশোধ করেন পাপিয়া। ওই সময়ে ওয়েস্টিন হোটেলে থাকা অবস্থায় প্রায় ৪০ লাখ টাকার শপিংও করেন। যার কোনো বৈধ উৎস দেখাতে পারেননি তিনি।
এছাড়া ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালে এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ বছরে বাসা ভাড়া বাবদ ৩০ লাখ টাকা, গাড়ির ব্যবসায় বিনিয়োগ করা এক কোটি টাকা এবং নরসিংদীতে কেএমসি কার ওয়াশ সলিউশানে বিনিয়োগ করা ২০ লাখ টাকা, বিভিন্ন ব্যাংকে নিজের ও স্বামীর নামে জমা করা ৩০ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৮ টাকারও কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি দুদকের অনুসন্ধানে।
অন্যদিকে র্যাবের অভিযানে তার বাসা থেকে ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা এবং সুমনের নামে হোন্ডা সিভিএ ২০১২ মডেলের ২২ লাখ টাকার গাড়ি জব্দ করা হয়। এরও কোনো বৈধ উৎস মেলেনি দুদকের অনুসন্ধানে।
এভাবে মোট ছয় কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার ৭১৮ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া যায়, যা আয়ের উৎসের স্বপক্ষে কোনো দালিলিক প্রমাণ না পাওয়ায় পাপিয়া এবং তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমনের বিরুদ্ধে দুদক আইন-২০০৪ এর ২৭ (১) ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়। চলতি বছরের মার্চ মাসে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন শাহীন আরা মমতাজ।