দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগের অন্যতম একটি প্রধান নৌ-রুট শিমুলিয়া-বাংলাবাজারে মঙ্গলবার থেকে আবার ফেরি চলাচল শুরুর কথা ভাবছে কর্তৃপক্ষ। পদ্মা সেতুর নিরাপত্তা বিবেচনায় প্রায় দুই মাস ধরে মাওয়া ঘাট নামে পরিচিত এই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। মাঝে এক সপ্তাহের জন্য ছোট যানবাহন পারাপারে চালু করা হলেও স্রোত বেড়ে যাওয়ায় সেটি বন্ধ করে দেয়া হয়।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) মহাব্যবস্থাপক মো. আজমল হোসেন বলেছেন, মঙ্গলবার থেকে ফেরি চলাচল আবার শুরু করার কথা আমরা ভাবছি। তবে আগে সকালে নদীর স্রোত পরীক্ষা করে দেখবো। স্রোত স্বাভাবিক থাকলে কাল থেকেই (মঙ্গলবার) ফেরি চলাচল শুরু হয়ে যাবে।
নদীতে প্রবল স্রোতের কারণে পদ্মা সেতুতে কয়েকবার ফেরির ধাক্কা লাগার ঘটনায় ১৮ই অগাস্ট থেকে এই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।
মাঝে ৪৮দিন পর চৌঠা অক্টোবর থেকে পাঁচটি ছোট ফেরির মাধ্যমে ছোট গাড়ি পারাপার শুরু হয়েছিল। কিন্তু স্রোত বেড়ে যাওয়ায় ১১ই অক্টোবর থেকে সেটিও বন্ধ করে দেয়া হয়।
এই রুটের ফেরি চলাচল বন্ধ থাকার কারণে, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, গোপালগঞ্জ বা খুলনার ঢাকাগামী যানবাহনগুলোকে বাড়তি পথ ঘুরে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ার অতিরিক্ত পথ ঘুরে যাতায়াত করতে হয়েছে।
জুলাই থেকে অগাস্ট মাসের মধ্যে নির্মীয়মান পদ্মা সেতুতে অন্তত পাঁচবার ফেরির ধাক্কা লাগে। তখন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছিলেন, সেতু সলিড একটি স্থাপনা। এতে সেতুর কোন ক্ষতি হবে না। তবে এ ধরণের ঘটনা একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত। এছাড়া ফেরিগুলোর অনেক ক্ষতি হচ্ছে। জানমালের নিরাপত্তার বিষয়টিও আছে।
এরপর বৈঠক করে প্রথমে ভারী যানবাহন নিয়ে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। পরবতীতে সব ধরনের ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী তখন বলেছিলেন পদ্মা নদীতে এখন তীব্র স্রোত এবং সেতুর পিলার ও বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নির্মাণ কাজের স্থাপনার জন্য স্রোতের চরিত্রেও পরিবর্তন এসেছে।
তিনি বলেন, স্রোতের ঘুর্ণি পরিবর্তিত হচ্ছে। পদ্মা এমনিতেই আনপ্রেডিক্টেবল নদী। ফেরিগুলো টার্ন নিয়ে সেতুর পিলারের মাঝখান দিয়ে আসা দুরূহ হয়ে গেছে। পদ্মা সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি জানিয়েছে, পদ্মা সেতু যান চলাচলের উপযোগী হতে ২০২২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত লেগে যাবে। অন্য সব আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করে আগামী বছরের জুন নাগাদ সেতু খুলে দেয়ার চিন্তা আছে সরকারের। সেতুর ওপর এখন যান চলাচলের সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে। সূত্র: বিবিসি বাংলা।