দুর্নীতিবাজদের শনাক্তে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু করবে দুদক। ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব চালু হচ্ছে জানুয়ারিতে। হুন্ডি, অর্থ পাচার ও অবৈধ অর্থ লেনদেনসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু করতে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। এরইমধ্যে বিদেশ থেকে সর্বাধুনিক যন্ত্রপাতি নিয়ে আসা হয়েছে সংস্থাটির ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাবে। আন্তর্জাতিক মানের এ ল্যাবটির কার্যক্রম আগামি জানুয়ারিতেই শুরু হতে যাচ্ছে।
অর্থপাচার, অবৈধ লেনদেনসহ নানা দুর্নীতির অকাট্য প্রমাণ থেকে যায় মোবাইল, কম্পিউটারসহ নানা ডিভাইসে। কখনো কখনো এসব রেকর্ডপত্র মুছেও ফেলেন প্রযুক্তি ব্যবহারকারী দুর্নীতিবাজরা।
তথ্য প্রমাণ না থাকার কারণে অনেকক্ষেত্রে এসব দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নিতে পারে না দুদক। উন্নত বিশ্বের দুর্নীতি দমন সংস্থা ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে বছর দুয়েক আগে ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব গঠনের উদ্যোগ নেয় দুদক।
এরপর দুদকের প্রধান কার্যালয়ে শুরু হয় ফরেনসিক ল্যাবের প্রস্তুতি কাজ। ল্যাবের কক্ষটি সুরক্ষিত থাকায় এর যন্ত্রপাতিসহ বিভিন্ন প্রযুক্তির ছবি নেয়া সম্ভব হয়নি।
সম্প্রতি এ ল্যাবে কম্পিউটার ফরেনসিক, মোবাইল ফরেনসিক, অডিও এবং ভিডিও ফরেনসিকের সবশেষ প্রযুক্তি আনা হয়েছে। যেগুলোর মাধ্যমে মুছে ফেলা যেকোনো তথ্য, অডিও, ভিডিও, ই-মেইল পুনরুদ্ধার করা যাবে। দুর্নীতির মামলার আসামি কিংবা সন্দেহভাজনদের ভয়েস বায়োমেট্রিকের মাধ্যমে অডিও ভিডিওর কথোপকথনও শনাক্ত করা যাবে। গোপনীয়তার কারণে আরও অনেক সুবিধার বিষয়টি খোলাসা করতে চায় না দুদক।
দুদক সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, আসামিরা বিভিন্ন ধরনের অ্যাপসের মাধ্যমে অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করে। কিছু কিছু গোপনীয় অ্যাপস আছে যেগুলো থেকে আমরা অনেক সময় তথ্য নিতে পারি না। ফরেনসিক ল্যাব ব্যবহার করলে এসব অ্যাপস থেকে আমরা গোপনীয় তথ্য বের করতে পারবো।
দুদকের সাইবার ইউনিটের প্রধান রাজীব হাসানের নেতৃত্বে একটি টিম ডিসেম্বরে বিদেশে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেবে, জানুয়ারিতে চালু করা হবে অত্যাধুনিক ডিজিটাল ল্যাবরেটরিটি। ফরেনসিক ল্যাব তদন্তে অনেক গতি আনবে মনে করেন দুদক সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার।
তিনি বলেন, আমরা কিছু যন্ত্রপাতি এনে এরিমধ্যে সেগুলো ইনস্টল করেছি। সেগুলো ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত আছে। এসব ডিভাইস অপরাধীদের ধরার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন।
গোপনীয়তার জন্য এসব প্রযুক্তির নাম, কোন দেশ থেকে আনা হয়েছে, তা খোলাসা করতে চান না দুদকের কোনো কর্মকর্তা।