আবৃত্তি ও বক্তৃতানুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কবি মাহবুব উল আলম চৌধুরীকে স্মরণ করেছে বাংলা একাডেমি। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, ফ্যাসিবাদ, শোষণ, আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তারুণ্যের প্রথম প্রভাতেই নিজের দৃঢ় অবস্থান প্রকাশ করেছেন কবি। বাংলাকে রাষ্টভাষা প্রতিষ্ঠার দাবিতে চট্টগ্রামে সর্বদলীয় রাষ্টভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক ছিলেন মাহবুব উল আলম চৌধুরী। গতকাল ৭ নভেম্বর ছিল একুশের প্রথম কবির ৯৪তম জন্মবার্ষিকী।
গতকাল রবিবার বিকালে কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে একক বক্তৃতা করেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মনিরুজ্জামান। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন একাডেমির সচিব এ. এইচ. এম. লোকমান।
অধ্যাপক মনিরুজ্জামান বলেন, মাহবুব উল আলম চৌধুরীকে স্মরণের মধ্য দিয়ে বাংলা একাডেমি এক গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক দায়িত্ব পালন করেছে। মাহবুব উল আলম চৌধুরী শুধু ভাষা আন্দোলনের প্রথম কবিতার কবি নন, একই সঙ্গে আমাদের সাংস্কৃতিক জগতের এক উজ্জ্বলতম মানুষও ছিলেন। চট্টগ্রাম থেকে ‘সীমান্ত’ পত্রিকা প্রকাশের মধ্য দিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, ফ্যাসিবাদ, শোষণ, আগ্রাসন ও পশ্চাৎপদতার বিরুদ্ধে তাঁর দৃঢ় অবস্থান প্রকাশ করেছেন তারুণ্যের প্রথম প্রভাতেই। প্রবীণ বয়সেও তারুণ্যের সঙ্গে তাঁর নিবিড় সম্পৃক্ততা বিশেষভাবে উল্লেখের দাবি রাখে।
কে এম খালিদ বলেন, সাম্প্রদায়িক চিন্তা প্রসারের উন্মত্ততার কালে মাহবুব উল আলম চৌধুরীর মতো অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তিত্বকে স্মরণের তাৎপর্য অনেক। চট্টগ্রামকেন্দ্রিক প্রগতিশীল শিল্পসাহিত্য ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলার মাধ্যমে মাহবুব উল আলম চৌধুরী বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তি জোরদারে ভূমিকা রেখেছেন। ভাষা আন্দোলনের প্রথম কবিতার এই কবির প্রতি জাতি হিসেবে আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।
কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, মাহবুব উল আলম চৌধুরীর কাছে আমাদের বারবার ফিরে যেতে হবে। ভাষা আন্দোলনের প্রথম কবিতার পাশাপাশি ‘সীমান্ত’ পত্রিকার স্মরণীয় কিছু সংখ্যার জন্যও তিনি ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবেন। নানান সাংগঠনিক সম্পৃক্ততার মাধ্যমে তিনি নিজেকে বিস্তৃত করেছেন গণমানুষের মাঝে। সংস্কৃতিকে তিনি সমাজ-পরিবর্তনের শুভ হাতিয়ার হিসেবে গণ্য করেছেন। অনুষ্ঠানে মাহবুব উল আলম চৌধুরীর কবিতা থেকে আবৃত্তি করেন আবৃত্তিশিল্পী আয়েশা হক শিমু।