পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, সাইবার বিশ্বে নারীরাই বেশি হয়রানির শিকার হচ্ছে। একইসঙ্গে রাষ্ট্র-সমাজ থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত পর্যায়েও এর শিকার হয়। তবে হয়রানির শিকার হলে লুকিয়ে না থেকে পুলিশের সহায়তা নিতে হবে, পুলিশকে জানাতে হবে, অপরাধীদের বিপক্ষে অবস্থান নিতে হবে। এমন হয়রানি প্রতিরোধে সর্বপ্রথম নিজেকেই সচেতন হওয়ার তাগিদ দিয়ে আইজিপি বলেন, চিন্তা-ভাবনা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম চালাতে হবে। ওখানে কোনটা দেওয়া যাবে, কোনটা দেওয়া যাবে না এবং কোনটা গ্রহণ করতে হবে, কোনটা গ্রহণ করা ঠিক হবে না- সেই বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ সদর দপ্তরে ‘পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন’ এর বর্ষপূতি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন তিনি। আইজিপি বেনজীর আহমেদ বলেন, কোনো নারী-পুরুষ ‘ভিকটিম’ হোক এটা আমরা চাই না। তারপরেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে কোনো নারী যদি ‘ভিকটিম’ হয়েই যান তাহলে সেটি লুকিয়ে রাখবেন না। আমরা চাই, অপরাধীদের শাস্তি হোক।
সামাজিক কারণে অনেকেই এ সংক্রান্ত বিষয়ে মামলা-মোকদ্দমা করতে চায় না জানিয়ে তিনি বলেন, তরুণ মেয়েরাই মূলত ‘ভিকটিম’ হচ্ছে বেশি। সমাজ বা সম্মানের ভয়ে তারা অভিযোগ করতে চায় না। সবচেয়ে মুশকিল হয় তখনই, যখন অপরাধীকে শনাক্ত করার পরে ‘ভিকটিক’ পিছু হটে। তাই আমাদেরকে এটা মোকাবিলা করতে হবে। সামাজিক ‘ট্যাবু’ ভাঙতে হবে। বর্তমানে সাইবার ওয়ার্ল্ডে নানা ধরনের প্রোপাগান্ডায় রাষ্ট্র ব্যক্তি ও সমাজ ‘ভিকটিম’ হচ্ছে জানিয়ে আইজিপি বলেন, সাইবার বুলিং ও সাইবার সন্ত্রাসের ক্ষেত্রে নারীরা সবচেয়ে বড় ভিকটিম। এই প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে। অনেকে বুঝতেই পারেন না, তারা এই সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছেন। যারা এই সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন তারাই বুঝতে পারেন কী পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছেন। এর ফলে ব্যক্তির মানবিক ও মানসিক বিপর্যয় ঘটে।
ইন্টারনেট ব্যবহারের সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আইজিপি বলেন, নারীদের নিয়ে যেসব সাইবার ঝুঁকি আছে, সেসব ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে হবে। কোনো ব্যক্তিগত তথ্য সামাজিক মাধ্যমে একবার যদি ছড়িয়ে পড়ে, কোটি কোটি মানুষের কাছে চলে যায়। হয়তো একটা আইডি ব্লক করা গেল, কিন্তু ওই আইডি থেকে কোটি কোটি শেয়ার-ট্যাগ হয়ে যায়। অনুষ্ঠানে পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজি, ডিআইজি এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেনের সেবাগ্রহীতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া সারা দেশ থেকে বাংলাদেশ পুলিশের সব ইউনিট ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিল। অনুষ্ঠানে ফেসবুক পেজটির গত এক বছরের কার্যক্রম সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়।