বাংলাদেশে এখন বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ বিরাজ করছে। সরকার বিনিয়োগকারীদের জন্য সবধরনের সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। এসব সুযোগ-সুবিধা লুফে নিতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার সকালে ‘আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলন-২০২১’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এই আহ্বান জানান।
রাজধানীর ‘রেডিসন ব্লু’ হোটেলে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে একটি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে আমরা অবকাঠামো উন্নয়নসহ সমস্ত নীতি সহায়তা প্রদানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শেখ হাসিনা বলেন, এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, জাপান, ভারত, সৌদি আরব, তুরস্ক, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের ১৫টি দেশের দুই হাজার ৩৩২ জন নিবন্ধন করেছেন জেনে আমি আনন্দিত।
বিদেশিদের বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘বিনিয়োগের জন্য আমরা সম্ভাবনাময় ১১টি খাত চিহ্নিত করেছি। সেগুলো হচ্ছে, অবকাঠামো, পুঁজিবাজার ও ফাইন্যান্সিয়াল সেবা, তথ্য-প্রযুক্তি, ইলেক্ট্রনিকস উৎপাদন, চামড়া, স্বয়ংক্রিয় ও হালকা প্রকৌশল, কৃষিপণ্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, স্বাস্থ্যসেবা ও ঔষধ, পাট-বস্ত্র, এবং ব্লু-ইকোনমি।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, এই সম্মেলনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে এসব খাতের সম্ভাবনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। বিশ্বে বাংলাদেশি পণ্যের নতুন বাজার সৃষ্টি হবে এবং বাংলাদেশ কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ আকর্ষণে সক্ষম হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ২০০৮ সাল থেকে পরপর তিন দফা নির্বাচনে জয়লাভের ফলে দেশে বিরাজমান রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দক্ষ-পরিশ্রমী জনসম্পদ সৃষ্টি, আকর্ষণীয় প্রণোদনার মাধ্যমে উদার বিনিয়োগ-নীতি এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিশাল বাজারের মধ্যবর্তী ভৌগলিক অবস্থানের জন্য বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের গুরুত্ব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের প্রতি আস্থার ফলে ৬০ শতাংশের বেশি প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ আসছে পুনঃবিনিয়োগের মাধ্যমে।’
বিডা জানায়, ‘বাংলাদেশ: ডিসকভার লিমিটলেস অপারচুনিটিজ’ শীর্ষক একটি ট্যাগলাইনসহ শীর্ষ সম্মেলনে ১৪টি পৃথক সেশন থাকবে, যার মধ্যে ১১টি নীল অর্থনীতি, স্বাস্থ্যসেবা এবং ওষুধ, পরিবহন এবং লজিস্টিকস, পুঁজিবাজার, শক্তি এবং জ্বালানি, আর্থিক পরিষেবা, কৃষি ব্যবসা, চামড়া এবং চামড়াজাত পণ্য, পোশাক, বৈদ্যুতিক এবং ইলেকট্রনিক্স উৎপাদনে সম্পৃক্ত থাকবে। দেশের ক্রমবর্ধমান বিনিয়োগ প্রতিযোগিতা, ব্যবসায়িক পরিবেশের উন্নতি, ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল যে সুযোগগুলো তৈরি করছে তা বাংলাদেশের অর্থনীতির দুর্দান্ত উত্থানের গল্পের পাশাপাশি সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্র তৈরি করবে বলে মনে করছেন সম্মেলনের আয়োজকরা।