ঢাকা কাস্টম হাউজের চলছে হরিলুট। দুই উপ-কমিশনারের অব্যাহত দুর্নীতির কারণে রাজস্ব কাঠামো ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। আমদানি নীতি আদেশ পদায়ন নীতিমালাসহ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিদ্যমান এস আর ও যথাযথভাবে প্রতিপালন না হওয়ায় এহেন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে অভিযোগ উঠেছে। জালিয়াতি ও শুল্ক ফাঁকির অসংখ্য ঘটনা ঘটলেও দেখার কেউ নেই।
জানা যায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের দুই সদস্যকে ম্যানেজ করে ঢাকা কাস্টম হাউজে কর্মরত উপ-কমিশনার মো: সানোয়ারুল কবির ও মো: আব্দুস সাদেক সমন্বয়ে গঠিত সিন্ডিকেটে বিগত দু’বছর ধরে রামরাজত্ব চালিয়ে আসছেন। এর মধ্যে ১ সদস্য পিআরএলকে সামনে রেখে প্রতি মাসেই হাতিয়ে নিয়েছেন মোটা অংকের টাকা। এই দুই কমিশনারের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রিভেন্টিভ বিভাগ ও এয়ারফ্রেইট ইউনিট হচ্ছে রাজস্ব আদায়ের বড় সেকশন। এখানে ২৬ জন রাজস্ব কর্মকর্তা ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা থাকলেও ঐ সিন্ডিকেটের আস্থাভাজন ৬ কর্মকর্তাকে দিয়ে পণ্য খালাসের কাজ করানো হচ্ছে। অন্য ২০ কর্মকর্তা অফিসে নিয়মিত গেলেও তাদেরকে পণ্য খালাসের কাগজপত্র না দেয়ায় সারাদিন বসে থেকেই তারা বাড়ি ফিরছেন।
সম্প্রতি এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে তথ্য পাচার সন্দেহে ৭ রাজস্ব কর্মকর্তাকে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে বদলি করা হয়। যারা এয়ারপোর্ট কাস্টমস দেড় থেকে দ’বছর কর্মরত ছিলেন। অথচ ৩ বছর অধিককাল কর্মরত রয়েছেন বহাল তবিয়তে। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সূত্রমতে এই সিন্ডিকেট মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে আমদানী করা জীবন বিনাশী যৌন উত্তেজক ঔষধ টিভি প্যানেলসহ নানান ধরনের অবৈধ পন্য আমদানিতে সহযোগিতা করে হাতিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা। একটি সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠানের সাথে তারা অলিখিত পার্টনারশিপে ব্যবসাও পরিচালনা করে আসছেন।
বিনিময় ঐ সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠানকে নানান অবৈধ সুযোগ সুবিধা দেয়ার ও অভিযোগ রয়েছে। অপরদিকে দীর্ঘদিন ঢাকা বিমানবন্দরে কর্মরত থাকার সুবাদে এই দুই কমিশনার অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিশাল বিত্ত-বৈভবের মালিক হয়েছেন। উপ-কমিশনার সানোয়ার ও সাদেকের রাজধানী ঢাকাতে রয়েছে বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট। যেগুলো বেনামীতে নিজস্ব আত্মীয়-স্বজনের নামে করা হয়েছে। যাতে পরবর্তীতে হেবা দলিলের মাধ্যমে নিজেদের নামে ফেরত আনা যায়। শুধু তাই নয় এই কর্মকর্তার রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে বিলাসবহুল বাড়ি। যেটা তার পিতার নামে করা হয়েছে বলে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। অপরদিকে উপ-কমিশনার আব্দুস সাদেক হচ্ছেন উপ-কমিশনার সানোয়ারের বিশ্বস্ত সহযোগী। এ কারণেই তারা যৌথ বাণিজ্য চালিয়ে বৈধ আয়বহির্ভূত কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক বনে গেছেন। যা গোপন’ তদন্তে উদ্ঘাটিত হবে বলে সূত্র জানায়।