সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবি ব্যবহার করে অশালীন মন্তব্য, মিথ্যা তথ্য, আক্রমণাত্মক ও হুমকিমূলক স্ট্যাটাস দেওয়ারর অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ডা. তৃণা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন আইনজীবী গোলাম মারুফ মজুমদার (নিঝুম মজুমদার)। শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) শেরেবাংলা নগর থানায় মামলাটি দায়ের করা হয় বলে তথ্য নিশ্চিত করেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উত্তম কুমার।
তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় আসামি করা হয়েছে ডা. তৃণা ইসলাম (৩১), ফারজানা প্রিয়দর্শিনী আফরিন ওরফে ফারজানা আফরিন (৩৫), মেহেদি হাসান মুন্না (৩০), এমডি ওবায়দুল্লাহকে (৩২)। এজাহারে তৃণা ইসলামের স্ট্যাটাসের বেশ কয়েকটি লিংক বিষয়বস্তু উল্লেখ করেছেন মামলার বাদী। আমরা বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছি এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ বাদী গোলাম ফারুক মজুমদার ওরফে নিঝুম মজুমদার বলেন, ‘তৃণা ইসলাম এবং তার সহযোগী কয়েকজন মিলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করেছে। মিথ্যা কুরুচিপূর্ণ মানহানিমূলক বক্তব্য এবং স্ট্যাটাস দেওয়া হয়েছে আমাকে নিয়ে। তার এসব স্ট্যাটাসে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ফারজানা আফরিন ও মেহেদি হাসান মুন্না কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। এতে আমার ব্যক্তিগত সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে।’
মামলার বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ডা. তৃণা ইসলাম বলেন, ‘মামলার বিষয়টি আমার কাছে অদ্ভুত লাগছে। নিঝুম মজুমদারকে আমি চিনি না। তিনি প্রতিনিয়ত আমাকে উদ্দেশ্য করে খারাপ স্ট্যাটাস দিতো। আমি তার একটি লিঙ্ক শেয়ার করেছিলাম। ফেসবুকে কারো সম্মানহানীকর পোস্ট দেয়া বা পোস্ট করা বেআইনী, শিক্ষিত নাগরিক হিসেবে আপনার জানার কথা এ কথার জবাবে ডাক্তার তৃণা বলেন, এমনিতেই আমি একটি মামলার ভিকটিম। বিষয়টি নিয়ে পরে কথা বলবেন বলে জানান ডাক্তার তৃণা ইসলাম। এদিকে মামলার অপর অভিযুক্ত ফারজানা প্রিয়দর্শিনী আফরিন ওরফে ফারজানা আফরিন মুঠোফোনে বলেন, আমি পরীমনির পক্ষে লিখেছি, মিন্নির পক্ষে লিখেছি। বর্তমানে জেন্ডার নিয়ে কাজ করছে এমন একটি এনজিওতে কাজ করছি। সাংবাদিকতা পেশায় নিজেকে সম্পৃক্ত রাখতে ‘নিউজ নাও বাংলা’ নামে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে কাজ করছি। আমার বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার ঘটনায় ঘটনায় আমি বিস্মিত। নিঝুম মজুমদারকে চিনি না।
মামলার খবর প্রকাশিত হওয়ায় আমি বিস্মিত। আসলে মামলা হয়নি। একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। সাইবার মামলার তালিকায় খোঁজ নিয়েছি সেখানে এই মামলাটি নেই। ফারজানা আফরিন আরো বলেন, নিঝুম মজুমদারকে আমি চিনি না। ডাক্তার তৃণা ইসলামের সাথে আমি ফেসবুকে আছি। নিঝুম মজুমদার ডাক্তার তৃণাকে নিয়ে প্রায়ই বাজে পোস্ট দিতো। আমি তার প্রোফাইলে গিয়ে তার সম্পর্কে নেতিবাচক অনেকগুলো তথ্য দেখতে পেয়ে আমি একটি মন্তব্য করেছিলাম “যার পাছায় লুঙ্গী নেই সে আবার অন্যের মাথার পাগড়ি আছে কী না সে খবর নেয়।” অপর অভিযুক্ত মেহেদি হাসান মুন্না প্রবাসে আছেন এবং এমডি ওবায়দুল্লাহর সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এদিকে শেরে বাংলানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উত্তম কুমার আর বলেন, শেরেবাংলা নগর থানায় দায়ের করা মামলা নম্বর-৭। আইনের ২৫(২), ২৬(২), ২৯(১), ৩১(২), ৩৫(২) ধারায় মামলা হয়েছে। উল্লেখ্য, ফারজানা প্রিয়দর্শিনী আফরিন ওরফে ফারজানা আফরিন তার প্রথম স্বামী বগুড়ার আইনজীবী তানজিব আল মিজবাহর বিদেশে অবস্থানকালীন সময়ে তার বন্ধু আবু বকর সিদ্দিককে গোপন প্রেমের মাধ্যমে বিয়ে করেন তিনি। একইভাবে ডাক্তার তৃণা ইসলামও প্রথম স্বামীকে ছেড়ে অন্যের স্বামী দখলের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে মামলা দায়ের করেন। তাদের বিরুদ্ধেই নৈতিকতা বিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে।