ঢাকার নবার পরিবারের খাজা মৌলভী আব্দুল্লাহ ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্টের কোটি টাকা আত্মসাত, নবাব পরিবারের সম্মান ভুলুণ্ঠিত করা এবং চাঁদাবাজিসহ উচ্চ আদালতের রায় পক্ষে আনার অজুহাত দেখিয়ে ট্রাস্টের ফান্ড থেকে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক সভাপতি খাজা সায়ীদ, সাধারণ সম্পাদক মো. হানিফ ও অর্থ সম্পাদক খাজা ওয়াসিস আহমেদকে আসামী করে মামলা হচ্ছে। সাবেক এই তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উল্লেখিত অভিযোগে খাজা মৌলভী আব্দুল্লাহ ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্টের অংশীদারগণ আগামী সপ্তাহের মধ্যে আদালতে মামলা করতে যাচ্ছে।
এছাড়াও তাদের সীমাহীন দুর্নীতি, ট্রাস্টের মার্কেট এলাকায় চাঁদাবাজি, ফান্ড আত্মসাতের ঘটনায় অংশীদারগণ ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। এই ক্ষোভের বহি:প্রকাশের একটি দিক হচ্ছে সাবেক সভাপতি খাজা সায়ীদ, সাধারণ সম্পাদক মো. হানিফ ও অর্থ সম্পাদক খাজা ওয়াসিস আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা। এদিকে অপর এক সূত্র থেকে জানা গেছে, একাধিক দৈনিক পত্রিকায় খবর প্রকাশের পর বিষয়টি সরকারের একটি সংস্থা তদন্ত শুরু করেছে। খুব শিগগিরই অভিযুক্ত ওই খাজা সায়ীদ, মো. হানিফ ও খাজা ওয়াসিস আহমেদকে টাকার বিনিময়ে আদালতের রায় পক্ষে আনার প্রক্রিয়া জানাসহ অন্যান্য অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এরই মধ্যে সংস্থাটি অভিযোগের প্রমাণাদি সংগ্রহ করার কাজ করছে।
সূত্র জানায়, খাজা সায়ীদের নেতৃত্বে ট্রাস্ট বাদী হয়ে দায়ের করা মামলার রায় পক্ষে আনার কথা বলে রেজ্যুলেশন করে ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ১৯/০২/২০১৫ থেকে ১৮/০২/২০২০ মেয়াদে ট্রাস্টের কমিটি। এই মেয়াদে ট্রাস্ট্রর চেয়ারম্যান পদে থাকা খাজা সায়ীদ, সাধারণ সম্পাদক মো. হানিফ ও অর্থ সম্পাদক খাজা ওয়াসিস আহমেদ নানা অপকর্ম, দুর্নীতি, চাঁদাবাজির মাধ্যমে “খাজা মৌলভী আব্দুল্লাহ ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্ট” কে কলঙ্কিত করেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অংশীদারদের একটি সূত্র জানায়, ট্রাস্টের সাবেক সভাপতি সেক্রেটারি ও ট্রেজারার মিলে হাই কোর্টের রায় নিজেদের পক্ষে আনার কথা বলে ২০ লাখ টাকা ট্রাস্টের ফান্ড থেকে তুলে নিয়েছে। সেই ২০ লাখ টাকা মৌলভী খাজা আব্দুল্লাহ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের ভাউচার নং ৫৯৮ এ এডভোকেটকে প্রদান করা হয়েছে মর্মে দেখানো হয়েছে। কিন্তু কোন এডভোকেটকে এ টাকা দেয়া হয়েছে তা উল্লেখ করা হয়নি।
আবার সে ভাউচারে গ্রহীতা হিসেবে কারো স্বাক্ষরও নেই। এ ছাড়া বিভিন্ন খাত থেকে আয় হওয়া আরো কোটি কোটি টাকা দূর্নীতির অভিযোগ সামনে আসছে। নবাব বংশের বহু বেনিফিসারির মাঝে এ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ দানা বেধেঁছে। তাছাড়া নবাব পরিবারের ঐতিহ্যের সাথে জড়িত তাদের মর্যাদার হানি হচ্ছে এমন সংবাদে অনেকই ক্ষুব্ধ। খাজা সায়ীদ, খাজা হানিফ ও খাজা ওয়াসিস এর দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও অপকর্মের জন্য নবাব বংশের মর্যাদার হানী হয়েছে বলে বহু বেনিফিসিয়ারী তাদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একই বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত সাধারণ সম্পাদক খাজা হানিফ ও ট্রেজারার খাজা ওয়ায়েজ জানান, ট্রাস্ট সরকারী নয়।
এটি মালিকানাধীন। অতএব এ টাকা কাকে দেয়া হয়েছে তা বলা যাবেনা বলে ফোন কেটে দেন। এ দিকে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীর ইসলামপুরসহ আশ পাশে খাজা মৌলভী আব্দুল্লাহ ট্রাস্টের নামে বেশ কিছু সম্পদ রয়েছে। আরেকটি সূত্র জানায়, মার্কেটের দুই পাশের ফুটপাতের দোকান থেকে অভিযুক্ত খাজা সায়ীদ, মো. হানিফ ও খাজা ওয়াসিস আহমেদ ৩০ লাখ টাকা আদায় করেন। নিজেরা পকেটস্থ করার মাধ্যমেও ফুসিয়ে তুলেছেন বেনিফিসিয়ারীদের। একজন ব্যবসায়ী বলেন, অভিযুক্ত তিনজনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে তাদের আইনের আওতায় আনা হলে খাজা মৌলভী আব্দুল্লাহ ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্টেও মর্যাদা পুণরুদ্ধার হতে পারে।