দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেছেন, অতীতে সমাজে দুর্নীতিবাজদের ঘৃণার চোখে দেখা হতো। আর এখন তাদেরকে সম্মান করা হয়। বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে দুদক আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।
দুদকপ্রধান বলেন, ‘অতীতকালে দুর্নীতিবাজদের ঘৃণার চোখে দেখা হতো, কিন্তু এখন তাদের সম্মান করা হয়। সমাজে তারা প্রতিষ্ঠিত।দুর্নীতিবাজদের প্রভাব-প্রতিপত্তির মোহে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে সমাজের অনেক মানুষ মুখিয়ে থাকে।
তিনি বলেন, ‘এভাবে সামাজিকভাবে ঘুষ ও দুর্নীতিকে গ্রহণযোগ্যতা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু দুর্নীতিবাজদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া ও সম্মান করা অপরাধ, এই বোধটি সমাজে জাগিয়ে তুলতে হবে।’
এ সময় দুদক চেয়ারম্যান সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষে সাফাই গান। তাদেরকে দুর্নীতিগ্রস্ত করতে লোভী ব্যক্তিরা প্রলুব্ধ করে থাকে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘দুর্নীতিগ্রস্ত বলতে আমরা সাধারণত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দিকে আঙুল তুলি। কিন্তু আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, প্রতিটি অনৈতিক লেনদেনের টেবিলের অন্যপ্রান্তে কেউ না কেউ থাকে। সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতিগ্রস্ত করতে লোভী ব্যক্তিগণ প্রলুব্ধ করে এবং ক্ষমতাশালীগণ ভীতি প্রদর্শন করে।’
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘সরকারি সেবা প্রদানে কেউ অবৈধ অর্থ দাবি করলে আমরা দিয়ে দিই, প্রতিবাদ করি না। কখনো কখনো যেন নিজেরাও সেই দুষ্টুচক্রে সুবিধাভোগী হয়ে উঠি।’
দুর্নীতি বৈষম্য ও নতুন নতুন সামাজিক সঙ্কট ও অপরাধ সৃষ্টি করে বলেও এ সময় মন্তব্য করে দুদক চেয়ারম্যান।
দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি উপস্থিত না থাকলেও তার বক্তব্যের ভিডিও দেখানো হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।এতে আরও বক্তব্য দেন- দুদক কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক খান ও মো. জহুরুল হক এবং দুদক সচিব মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার।