দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. ইউনুছ শরীফের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা না নেওয়ায় পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বদ্যিালয়ের (পবিপ্রবি) উপাচার্যকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ গত ২১ নভেম্বর এ আদেশ দিয়ে নোটিশ প্রাপ্তির এক মাসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
পটুয়াখালীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মতিন এন্টারপ্রাইজের মালিক গাজী মতিউর রহমানের দায়ের একটি রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট আদালত এ আদেশ দেন।
মতিউর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ইউনুছ শরীফ ২০১৫-১৬ অর্থবছরে পবিপ্রবির টিএসসি ভবনের সম্প্রসারণ কাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করলে ৯টি দরপত্র জমা পড়ে। এসব দরপত্রের মধ্যে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৩ কোটি ২ হাজার ৪৯৫ টাকার দরপত্র দিয়ে সর্বনিম্ন দরদাতা হন এবং আরেকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৩ কোটি ১৪ লাখ ৯৪ হাজার ৮৭৩ টাকা দর দিয়ে দরপত্র দাখিল করেন। ইউনুছ শরীফ দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং তিনি সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানকে বাদ দিয়ে আরেকটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগসাজশে তাকে সর্বনিম্ন ঠিকাদার হিসেবে মূল্যায়ন কমিটির সভায় উপস্থাপন করে কর্তৃপক্ষর অনুমোদন নেন এবং তাকে কার্যাদেশ দেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এতে পবিপ্রবির ১৪ লাখ ৯২ হাজার, ৩৭৭ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিষয়টি তদন্ত করে এ ঘটনার সত্যতা পায়। তদন্তকালে ইউনুছ শরীফ উক্ত ১৪ লাখ ৯২ হাজার, ৩৭৭ টাকা সরকারি কোষাগারে জমাও দেন। আত্মসাৎ করা টাকা স্বেচ্ছায় ফেরত দেওয়ায় তদন্ত শেষে দুদকের অভিযোগপত্রে ইউনুছ শরীফের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পবিপ্রবি ভিসির কাছে সুপারিশ করা হয় এবং দুদক ওই প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করে ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর অভিযোগপত্রটি আদালতে দাখিল করেন।’
পরে, দীর্ঘদিনেও পবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ দুদকের সুপারিশ মতো তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ইউনুছ শরীফের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা না নেওয়ায় ঠিকাদার গাজী মতিউর রহমান চলতি বছরের ১৪ নভেম্বর পবিপ্রবির রেজিস্টারের কাছে একটি নোটিশ পাঠান। এতেও কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিনি উচ্চ আদালতে রিট করেন।
এ ব্যাপারে পবিপ্রবির রেজিস্টার মো. কামরুল ইসলাম বলেন, ‘উচ্চ আদালতের নোটিশ পেয়েছি এবং চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ফজলুল হককে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ১৫ দিনের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ছাড়াও, বিষয়টিতে প্যানেল আইনজীবীদের মতামতও চাওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ও প্যানেল আইনজীবীদের মতামতের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি-র্নিধারণী ফোরাম ‘রিজেন্ট বোর্ডে’র সিদ্ধান্তা অনুযায়ী এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’