বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

আমতলীতে পিটিয়ে শিশুর হাত ভেঙে দিলেন মাদ্রাসাশিক্ষক

বরগুনা প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত সময় : সোমবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ২৮৩ পাঠক পড়েছে

বরগুনার আমতলী পৌরসভার দারুল আরকাম মডেল মাদ্রাসার এক শিশু ছাত্রকে পিটিয়ে হাত ভেঙে দেওয়া এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে চারদিন ধরে মাদ্রাসায় আটকে রাখারও অভিযোগ উঠেছে।

আবদুল্লাহ নামে ওই শিশুটি আমতলী উপজেলার চাওরা ইউনিয়নের চাওরা চালিতা বুনিয়া গ্রামের হারুন হাওলাদারের ছেলে। পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের একে হাইস্কুল সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে দারুল আরকাম মডেল মাদ্রাসার নুরানী অবাসিক শাখায় চিকিৎসা হয় তার।

আবদুল্লাহর পরিবারের অভিযোগ, গত ৯ ডিসেম্বর বিকেলে নুরানী শাখার ক্লাস করান মাদ্রাসাশিক্ষক আবু আক্কাস আলী। সেই ক্লাসে পড়া না পারায় আবদুল্লাহকে প্রথমে লাঠি দিয়ে পেটান আক্কাস আলী। এরপর সে চিৎকার দিলে শিক্ষক আরও ক্ষিপ্ত হয়ে যান। তখন বাম হাতের কনুইয়ে ডাস্টার দিয়ে আঘাত করেন তিনি। এতে আবদুল্লাহর হাতের জোড়া ছুটে যায়। এ অবস্থায় তাকে কোনো চিকিৎসাও দেওয়া হয়নি। অভিভাবককেও জানানো হয়নি। তাকে মাদ্রাসার একটি কক্ষে আটকে রাখেন শিক্ষক। প্রচণ্ড ব্যথায় চারদিন ধরে সে কাতরালেও শিক্ষক তার কোনো চিকিৎসা ও খোঁজ নেননি।

সোমবার সকালে আবদুল্লাহর মা মাদ্রাসায় তার ছেলেকে দেখতে এলে সে কান্না শুরু করে দেয়। তার হাতের কথাও জানায়। তখন মা মাদ্রাসা থেকে তার ছেলেকে আমতলী হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান।

সেখানে তার হাতের এক্স-রে করে দেখা যায় বাম হাতের জোড়া সরে গেছে। শিশু আবদুল্লাহ জানায়, পড়া না পারায় শিক্ষক তাকে মারধর করেছেন। এরপর তাকে কোনো চিকিৎসাও করানো হয়নি। বাড়িতেও যেতে দেননি।

আবদুল্লার মা পারুল বেগম বলেন, শিক্ষক আবু আক্কাস আলী পড়া না পারায় আমার ছেলেকে পিটিয়ে হাত ভেঙে দিয়েছেন। এমনকি চারদিন ধরে আটকে রেখেছেন। ছেলেটির কোনো চিকিৎসাও করাননি। সোমবার সকালে ছেলেকে দেখতে এসে আমি এ ঘটনা জানতে পারি। পরে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে এক্স-রে করাই। তখন দেখা যায় তার হাতের জোড়া সরে গেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

মাদ্রাসাশিক্ষক এ ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্য অনেক অনুরোধ করেছেন বলেও জানান পারুল বেগম।

সোমবার দুপুরে মাদ্রাসা ঘুরে দেখা গেছে, মাদ্রাসাটি তালাবদ্ধ। এখানে কোনো ছাত্রছাত্রী নেই। কিছু পুরাতন মালামাল পড়ে আছে শুধু।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, প্রচণ্ড আঘাতের কারণে ছেলেটির বাম হাতের জয়েন্ট সরে গেছে। হাতে ব্যান্ডেজ করে দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষক আক্কাস আলী বলেন, পড়া না পারায় দুই একটি চড়-থাপ্পর দিয়েছি। ডাস্টার দিয়ে হাত ভাঙার কথা অস্বীকার করেন তিনি। এছাড়া মারধরের পর আটকে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।

আমতলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রনজিৎ সরকার বলেন, হাত ভাঙা বাচ্চাসহ পারুল নামে একজন নারী থানায় এসেছিলেন। মৌখিকভাবে তিনি বিষয়টি জানিয়েছেন। তাদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

নিউজটি শেয়ার করে আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © 2019-2020 । দৈনিক আজকের সংবাদ
Design and Developed by ThemesBazar.Com
SheraWeb.Com_2580