কাশিমপুর কারাগারে থাকা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির সহযোগিতায় দুবাই থেকেই শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান দেশের বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। কারাগারে থাকা দুই সন্ত্রাসীর সঙ্গে পালিয়ে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের যোগাযোগের প্রমাণ পেয়েছে ডিবি।
সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান ও তার ভাই শামীম দুবাইয়ে পালিয়ে আছে। সেখানে বসে সে দেশে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড করে। এতে তাকে সহযোগিতা করে কাশিমপুর কারাগারে থাকা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুন্না এবং মামুন ওরফে ছক্কা মামুন। কারাগারে বসে এই দুজন আবার তাদের অনুসারীদের দিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি করে থাকে। কারাগারে থাকা এই দুই সন্ত্রাসীর সঙ্গে শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের এবং দেশে থাকা সন্ত্রাসীদের যোগাযোগের প্রমাণ পেয়েছে ডিবি।
গত ১৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় পূর্ববাড্ডা আলিফ নগর এলাকার জেনারেটর ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম খান টুটুলের পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা চায়। শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের নামে এই চাঁদা চাওয়া হয়। তা না হলে তার সন্তানকে খুন করার হুমকি দেয় সন্ত্রাসীরা। এই ঘটনায় বাড্ডা থানায় একটি মামলা করেন শহিদুল ইসলাম।
ডিবি এই ঘটনায় ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ উদ্ধার করে। ফুটেজ পর্যালোচনা করে গত ২১ ডিসেম্বর ওই ঘটনায় অস্ত্র ব্যবহারকারী সন্ত্রাসী মো. নাসিরকে (২১) গ্রেফতার করে পুলিশ। ২২ ডিসেম্বর সে আদালতে জবানবন্দি দেয়। জবানবন্দিতে ওমর খৈয়াম নিরু, জীবন হোসেন, ফারহান মাসুদ সোহান, নাঈম, রানা ও কাওছার আহমেদ ইমনেরর নাম বলে সে।
নাসিরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ডিবির গুলশান জোনের টিম পার্বত্য বান্দরবান জেলার দুর্গম এলাকা থেকে গত ২৬ ডিসেম্বর দুপুরে কাওছার আহমেদ ইমনকে (২৪) গ্রেফতার করে। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বাড্ডার বেরাইদ এলাকা থেকে একইদিন রাতে সন্ত্রাসীদের ভাড়া করা বাসা থেকে মোহাম্মদ জীবন হোসেনকে (২৫) একটি পিস্তল, চার রাউন্ড গুলিসহ একটি ম্যাগজিন ও এক হাজার পিস ইয়াবা, ওমর খৈয়াম নিরুকে একটি রিভলবার, চার রাউন্ড ২২ বোরের রিভলভারের গুলিসহ একটি ম্যাগাজিন ও ৪০০ পিস ইয়াবা, ফারহান মাসুদ সোহানকে একটি বিদেশি পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি এবং ৬০০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার করা হয়।
ইমনের তথ্য অনুযায়ী তার ঘরের একটি ব্যাকপ্যাক এর ভেতর থেকে দুই হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয় এবং একই ঘরে থাকা মো. আসালামকেও দুই হাজার পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার করা হয়।
হাফিজ আক্তার আরও বলেন, দুবাইয়ে অবস্থানরত জিসান ও তার ভাই শামিম এবং কাশিমপুর কারাগারে থাকা ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মামুনের ক্যাডার সোহান, ইমন, জীবন এবং নিরুর টাকার প্রয়োজন হলে তারা এলাকার বড় ভাই মো. মহিন উদ্দিন জালালের (৪৩) কাছে যায় এবং একটি কাজ অর্থাৎ টার্গেট দেওয়ার জন্য বলে। পরে মো. মহিন উদ্দিন জালাল জেনারেটর ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম টুটুলের খোঁজ দেয়। নীরু, জীবন ইমন কাজটি করার জন্য নাসিরকে ঠিক করে।