রাষ্ট্রপতির সংলাপে বিএনপির যোগ না দেওয়ার ঘোষণাকে গণতন্ত্রের জন্য ‘খারাপ খবর’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, সংলাপে না এলেও ভোটকে ‘প্রশ্নবিদ্ধ করতে’ বিএনপি ‘নির্বাচনে আসবে’ বলেই তার ধারণা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে মহামান্য রাষ্ট্রপতির সংলাপে আসবে না, এটা দেশের গণতন্ত্রের জন্য খারাপ খবর। তবে গাধা যেমন পানি ঘোলা করে খায়, বিএনপিও পানি ঘোলা করে নির্বাচনে আসবে।”
আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব দিতে সার্চ কমিটির মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের লক্ষ্যে ২০ ডিসেম্বর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় শুরু করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
এই সংলাপকে ‘অর্থহীন’ আখ্যায়িত করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বুধবার বলেছেন, তাদের দলের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটি এই সংলাপে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত নবম সংসদ নির্বাচন বিএনপি বর্জন করলেও দশম সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। অংশ নিয়েছিল ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতির সংলাপেও।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বিএনপি ‘আসবে’- এমন ধারণা প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “তাদের নির্বাচনে আশার উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা।
“কারণ তারা জানে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন অর্জনে জনগণের ভোটে বিএনপি জয়লাভ করতে পারবে না। তাদের উদ্দেশ্য নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা, এটা হলো তাদের এজেন্ডা।”
সংলাপে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলো ইসি গঠনে আইন করার পক্ষে যে মত দিয়েছে, সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, “এবারই আইনটা হতো, মহামারীর কারণে সম্ভব হয়নি, এবার না হলে আগামীবার হবে।
“এবার সময় একেবারেই হাতে নেই। এই সময়ে আইন করার মতো পরিস্থিতি একেবারেই ছিল না। সার্চ কমিটি গঠন, যেটা এবার হচ্ছে, গতবারও হয়েছে, সেটাও আইনের বাইরে নয়, নিয়মের বাইরে নয়, সংবিধানের বাইরে নয়।”
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের শুরুতে সাংবাদিকদের কাছে আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী জয় পাবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, “আমরা গত দুই নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জে জয়লাভ করেছি, এবারও জয়লাভের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি, বিজয়ের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। জনমতের সমর্থনের পাল্লা আমাদের প্রার্থীর দিকেই ভারী।
“আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাচ্ছি। দল করলে দলের সিদ্ধান্ত মানতে হবে। নিজেদের মধ্যে ছোটোখাটো কিছু হয়ে থাকলে সেটা নিরসন হবে।”
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, শিক্ষা ও মানব সম্পাদক সামসুন্নাহার চাঁপা, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লইলী, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুচিত রায় নন্দি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক, আবদুস সবুর, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় সদস্য আব্দুল আওয়াল শামীমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।