পুলিশ সব সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে। করোনার সময় তারা কোনো কিছু না ভেবেই ঝাঁপিয়ে পড়েছে। নিজেদের সুরক্ষার কথা চিন্তা না করে জনসাধারণের সেবা দিয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ সদস্যদের কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ সরকার অনুমোদিত করোনা ইনসিগনিয়া উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
এ সময় পুলিশ কনস্টেবল থেকে শুরু করে আইজি পর্যন্ত সব পুলিশ সদস্যকে করোনা মহামারির সম্মুখ সারির যোদ্ধা (ফ্রন্ট ফাইটার) হিসেবে স্বীকৃতিস্বরূপ ইনসিগনিয়া ব্যাচ পরিয়ে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, ‘যখন মায়ের লাশ ফেলে সন্তানেরা পালিয়ে যাচ্ছে, যখন এলাকায় একজনের করোনা হলে ওই এলাকার মানুষ সবাই পালিয়ে যাচ্ছে। সে সময় পুলিশ সবার পাশে দাঁড়িয়েছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাস আমরা প্রথমে দেখেছি এই অবস্থা হয়েছে, যা বলে বোঝানো যাবে না। দেশে গত ৮ মার্চ প্রথম একজন করোনা রোগী শনাক্ত হয়। তারপর দেশে আসতে থাকা ইতালিপ্রবাসীদের উত্তরা হাজী ক্যাম্পে রাখা হয়। সেখানেও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এ সময় পুলিশপ্রধান আমাকে বলেন, স্যার ব্যারাক খালী হয়ে যাচ্ছে। ওই সময় চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকায় ভয় পাচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে ইমপাজ হাসপাতাল ভাড়া নিয়ে পুলিশকে দেওয়া হয়। আর হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতাল র্যাবকে দেওয়া হয়।’
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘করোনা এক মহাকাব্যিক যুদ্ধ। কিছু সময় পুলিশ সদস্যরা নিজেদের সুরক্ষার কথা চিন্তা না করেই আগে সেবা দিয়েছেন। এ ছাড়া ওই সময়টাই দৈনিক ৭০০ থেকে ৮০০ জন করে পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ পর্যন্ত ২৬ হাজার পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হন। একজন এসপিসহ ১০৭ জন পুলিশ সদস্য মারা যান। এ অবস্থায় আহতদের মধ্যে খাবার পৌঁছানো, নিয়মিত টহল, পণ্যবাহী ট্রাকগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা—সব মিলিয়ে এক মহাযুদ্ধ চালিয়ে গেছে পুলিশ।’
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) ড. বেনজীর আহমেদের সভাপতিত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, র্যাবের ডিজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সিআইডির অতিরিক্ত কমিশনার কামরুল আহসান, ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তারসহ পুলিশের সব রেঞ্জের ডিআইজিরা।
.