জাতীয় গৃয়াহণ কর্তৃপক্ষ কর্মচারী ইউনিয়নের ২০২২-২০২৩ মেয়াদে নতুন কেন্দ্রিয় কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। গত রবিবার দুপুর ২টায় জাতীয় গৃহায়ণ কর্মচারী ইউনিয়নের নিজ কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের সিনিয়র অ্যাকাউনট্যান্ট মামুনুর রশিদ। নতুন কমিটিতে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মো. মনসুর আলম, কার্যকরী সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন এ কে এম সামছুদ্দোহা পাটোয়ারী এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন মো. দেলোয়ার হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাচনের জন্য গঠিত নির্বাচন কমিশনের দুই নির্বাচন কমিশনার জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের নকশাকার মহিউদ্দিন আহমদে ও বিভাগীয় হিসাবরক্ষক জাকির হোসেন।
নতুন কমিটিতে অন্যদের মধ্যে সিনিয়র সহসভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মো. আতিকুর রহমান, সহসভাপতি-১ মো. মোস্তফা কামাল, সহসভাপতি-২ মো. জহিরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মালেকিন নাছির, সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ আশরাফুল আলম এবং অর্থ সম্পাদক মো. নাছির হোসেন।
নবনির্বাচিত কমিটির সভাপতি মো. মনসুর আলম বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন এক মাসের বেশি সময় ধরে কষ্ট করে আজকে চূড়ান্ত ফলাফল দিতে পেরেছে, এই জন্য কমিশনকে ধন্যবাদ। জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের কর্মচারীরা মনসুর-দেলোয়ার পরিষদকে আবারও নির্বাচিত করায় সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা। যাঁরা আমাদের ওপর আস্থা রেখেছেন তাঁদের পাশে থেকে সে প্রতিদান দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘নতুন কমিটি ১০০ দিনের মধ্যেই কর্মসূচি দিয়ে চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে কর্মচারীদের যত দাবি-দাওয়া আছে সব কিছুর সমাধান করবে। সবাই নির্বাচনী কমিটিকে পাশে থেকে শক্তিশালী করবেন- এই প্রত্যাশা।’
বিজয়ীদের নাম ঘোষণার পর দেওয়া বক্তব্যে নবনির্বাচিত কমিটির কার্যকরী সভাপতি এ কে এম সামছুদ্দোহা পাটোয়ারী বলেন, ’অনেক দিন পর একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে। এটি সম্ভব হয়েছে নির্বাচন কমিশনের চেষ্টায়। আগামী দুই বছর আমাদের সকল কর্মচারীর লক্ষ্য থাকবে এই সেবা খাতের অফিসে সেবাগ্রহীতাদের কোনো ধরনের ভোগান্তি ছাড়া সেবা নিশ্চিত করা। আমরা সবাই মিলে জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কাজ করবে ইনশাআল্লাহ।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা যারা চাকরি করি তারা কেউ ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। তাই সবার সহযোগিতা জরুরি। কর্মচারীদের পেনশন সমস্যা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ইতিমধ্যে কমিটির সবাই আলোচনা করেছে। এই পরিষদের মাধ্যমেই সব দাবি পূরণ করা হবে। তাই সবাইকে উদার মন নিয়ে কাজ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, আমরা একটা শক্তি হিসেবে একসঙ্গে থাকলে সব কিছুই সম্ভব।’
নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ’জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষকে দীর্ঘদিন যাবৎ একট অশুভ প্রতিযোগিতা গ্রাস করে রেখেছিল। যাহোক অবশেষে সিনিয়রদের সহযোগিতায় একটি গ্রহণযোগ্য প্যানেল করতে পেরেছি। যার জন্য আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী পাওয়া যায়নি। সকল কর্মচারী এই কমিটিকে গ্রহণ করেছে, এটাই বড় প্রমাণ। তাই সকল কর্মচারীর প্রতি কৃতজ্ঞতা রইল।’
তিনি আরো বলেন, ’আজকের পর নতুন কমিটির সবার দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেছে। কর্মচারীদের যে সমস্যাগুলো আছে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, সকল কর্মচারী আমরা সমান। তাই যার যেকোনো সমস্যা থাকুক, সমাধানের জন্য কাজ করব।’
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৫ ডিসেম্বর এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। পরে ৭ ডিসেম্বর প্রকাশ করা হয় হালনাগাদ ভোটার তালিকা। এরপর ৯ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনারের কাছ থেকে সংগৃহীত বৈধ ও জমা তালিকা প্রকাশ করা হয়। আর ১৪ ডিসেম্বর শুনানি শেষে প্রকাশ করা হয় চূড়ান্ত প্রার্থীদের তালিকা। পরে ১৫ ডিসেম্বর প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। জানা যায়, এই সময়ের মধ্যে শুধু মনসুর-দেলোয়ার প্যানেল চাড়া বিপক্ষ কোনো প্যানেল বা ব্যক্তিগতভাবে মনোনয়ন সংগ্রহ বা জমা না দেওয়ায় চলতি বছরের শুরুর দিন ১ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও সেটি হয়নি। ফলে নির্বাচন কমিশন আজ ২ জানুয়ারি রবিবার মনসুর-দেলোয়ার পরিষদের প্রার্থীদের নির্বাচিত হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়।