বরিশাল নগরীর স্পিডবোট ঘাটসংলগ্ন বাঁধের পাশে পিঠা বিক্রি করেন মনিরুন্নাহার। তিনি বলেন, আমাগো এই সাইডের বাঁধ ভাঙ্গা বছর তিনেকতো হইবেই। আমরা যে রাস্তার উপর দিয়া হাঁটতাম, হেডাও ভাইঙ্গা গেছে বাঁধ ডাইব্বা যাওনে। এয়া সংস্কারও হয়না, কেউ দেখতেও আয় না।
নির্মাণের ছয় বছরেই একাধিকস্থানে ধসে গেছে বরিশালের শহররক্ষা বাঁধ। দীর্ঘদিন ধরে এমন অবস্থা থাকলেও সংস্কারের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেননি বরিশাল সিটি কর্পোরেশন। ফলে ঝুঁকিতে পরেছে বাঁধসংলগ্ন এলাকা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাঁধের নগরীর ৩০ গোডাউন বধ্যভূমিসংলগ্ন একটি, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের পেছনের গেটসংলগ্ন একটি, মেঘনা তেলের ডিপোসংলগ্ন স্থানে একটি, মুক্তিযোদ্ধা পার্কের আশপাশে আরও চারটিসহ মোট সাতটি স্থানে বড় ধস রয়েছে। দেবে গেছে বাঁধের সড়ক।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৬ সালে কীর্তনখোলা নদীর পারে সাগরদী খালের মুখ থেকে চরকাউয়া খেয়াঘাট পর্যন্ত শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে ২৫ কোটি টাকা দিয়ে বাঁধ ও বাকি টাকা দিয়ে বাঁধের উপর সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। নদী দখলের অভিযোগ ওঠায় এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না নেয়ায় হাইকোর্টে একটি রিট হলে বাঁধের কাজ শেষপর্যায়ে এসে বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে সাগরদী খালের মুখের ছোট ব্রিজ ও শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতুর নিচ পর্যন্ত বাঁধ ও সড়কের কাজ ঝুলে আছে। পরবর্তীতে যতটুকু বাঁধ নির্মাণ হয়েছে তার উপরেই সড়ক তৈরি করেছে সিটি কর্পোরেশন।
সচেতন নাগরিকদের মতে, সম্ভবত এখানেও বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি হয়েছে। এই বাঁধে ত্রুটি দেখা গেছে আরও ২/৩ বছর আগে থেকেই। মানুষের দুর্ভোগ কমাতে এগুলো ভালোভাবে সংস্কার করা উচিত। এমনভাবে পরে থাকলে শহর পুরোপুরি ঝুঁকির মধ্যে পরবে।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক হোসেন বলেন, শহর রক্ষা বাঁধের ধসের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে এবং ধসের জায়গাগুলো প্রকৌশল বিভাগকে পরিদর্শনের জন্য বলা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।