অবশেষে নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস বিফ্রিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ ব্যাপারে ব্রিফ করেন।
আইনের খসড়া প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এই আইনটা খুবই ছোট। এখানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য মহামান্য রাষ্ট্রপতির নিকট সুপারিশ প্রদানের নিমিত্তে একটা অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হবে, যেটা অন্যান্য আইনে যেভাবে আছে, ঠিক সেইভাবেই। এ কমিটি প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের জন্য নাম প্রস্তাব করে সুপারিশ করবে। রাষ্ট্রপতি এ সুপারিশের আলোকে নিয়োগ প্রদান করবেন।’
সচিব জানান, এই আইনে সার্চ কমিটি থাকবে এবং এই কমিটি নাম প্রস্তাব করতে পারবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারের বয়স হতে হবে ৫০ বছরের বেশি। কোনো সরকারি, বেসরকারি ও বিচার বিভাগীয় কাজের ২০ বছরের অভিজ্ঞতাও থাকতে হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার হওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্যতার মধ্যে রয়েছে দেউলিয়া, বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য, নৈতিক স্খলন বা যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত হওয়া।
নির্বাচন কমিশন আইন অনুযায়ী সার্চ কমিটিতে আপিল ও হাইকোর্টের বিচারপতি, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের প্রধান, রাষ্ট্রপতি মনোনীত দুজন সদস্য থাকবেন। সেই সঙ্গে ছয় সদস্যের কথাও বলা হয়েছে। আগামী দুই তিন দিনের মধ্যে আইনটি আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভেটিং শেষে সংসদে পেশ হলে নতুন কমিশন এই আইনের আওতায় হতে পারে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। নির্বাচন কমিশন গঠনে একটি আইনের কথা সংবিধানে থাকলেও স্বাধীনতার ৫০ বছরে সেটা প্রণয়ন করেনি কোনো সরকার। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে চলমান সংলাপে প্রায় সব দলই নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নের তাগিদ দিয়েছে। গতকাল রবিবার বিদেশি কূটনীতিকরাও সরকার এই আইন প্রণয়নের ব্যাপারে তাগিদ দেয়।