ভারত ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে প্রথম শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার, ২৭ জানুয়ারি। সম্মেলনে তালেবান নিয়ন্ত্রিত আফগানিস্তানের সংকট, আঞ্চলিক নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও জ্বালানি সংক্রান্ত বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। ভারতের আয়োজিত এ ভার্চুয়াল সম্মেলনে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট কাসিম-জোমার্ট তোকায়েভ, উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট শাভকাত মিরোমোনোভিচ মির্জিয়োয়েভ, তাজিকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইমোমালি রহমান, তুর্কমেনিস্তানের গুরবানজির গুরবানজিদ ও কিরগিজ প্রজাতন্ত্রের সাদির জাপারভ অংশ নেবেন।
২০২১ সালের আগস্টে তালেবান আফগানিস্তান দখলের পর উদ্বেগ বেড়েছে প্রতিবেশী দেশগুলোর মাঝে। একই সঙ্গে ভারত ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে এক ধরনের যোগাযোগ তৎপরতাও শুরু হয়েছে। গত বছর নভেম্বরে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশটিকে ঘিরে আঞ্চলিক নিরাপত্তাবিষয়ক সংলাপ এবং ডিসেম্বরে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। বৃহস্পতিবারের শীর্ষ সম্মেলনকে সামনের পথ নির্ধারণের এই প্রচেষ্টার চূড়ান্ত পরিণতি হিসাবে দেখা যেতে পারে।
আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থান এবং দেশটির সন্ত্রাসবাদ, মাদক পাচার, সাধারণ মানুষের দুর্বিষহ অবস্থাসহ নানা সংকট মোকাবিলায় প্রতিবেশী দেশগুলো কি ধরনের আচরণ করবে তার একটি স্পষ্ট ধারণা আসতে পারে এ সম্মেলন থেকে।
তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান এবং উজবেকিস্তান আফগানিস্তানের সঙ্গে সীমানা বণ্টনে সম্পৃক্ত-যা ভারতের জন্য উদ্বেগের বিষয় বলেও ধারণা করা হচ্ছে। অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (ওআরএফ) কৌশলগত গবেষণা কার্যক্রমের প্রধান হর্ষ ভি. পান্ত বলেন, তারা রাজনৈতিক অন্তর্ভুক্তির বার্তা পাঠাবে। আঞ্চলিক সাহায্যের প্রয়োজন হলে তালেবানদের একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে আচরণ করা উচিত বলেও মনে করেন তিনি।
ভারত-মধ্য এশিয়ার এই শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন একই সপ্তাহে একই নেতাদের সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের অনলাইন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে চীনা প্রেসিডেন্ট পাঁচশ মিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দেশগুলোর নেতাদের। শুধু তাই নয় সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় তাদের দৃঢ়ভাবে সমর্থন করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন শি।
চীন তার অর্থনৈতিক পেশী শক্তি প্রদর্শন করতে আগ্রহী এই অঞ্চলে, যখন রাশিয়া কাজাখস্তানের সহিংসতা দমনে নেতৃত্ব দিয়ে তার সামরিক প্রভাব প্রদর্শন করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ভৌগোলিক কারণে মধ্য এশিয়া আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। যেখানে একই সঙ্গে রাশিয়া আধিপত্য বাড়াতে নানা কৌশল অবলম্বন করছে, অন্যদিকে, চীন অর্থনৈতিক আধিপত্য বাড়াচ্ছে। ভারতও আরও বেশি আঞ্চলিক সম্পৃক্ততা বাড়াতে প্রস্তুত।