সামরিক জোট ন্যাটোতে ইউক্রেনকে না নেওয়ার যে দাবি রাশিয়া দিয়েছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার সৈন্য সমাবেশ নিয়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানটনি ব্লিংকেন রাশিয়ার দাবির বিষয়ে তার দেশের অবস্থান তুলে ধরেন। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ইউক্রেন সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরেই প্রায় এক লাখ সেনাসদস্য মোতায়েন করে রেখেছে প্রতিবেশী দেশ রাশিয়া। যেকোনো মুহূর্তে রুশ সেনারা দেশটিতে আক্রমণ চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও ইউক্রেনে হামলার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে বরাবরই দাবি করে আসছে রাশিয়া। পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে পূর্ব ইউরোপে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চায় মস্কো।
ইতোপূর্বে রাশিয়া পরিষ্কার করেই বলেছে যে, ইউক্রেনকে কখনোই সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগ দিতে না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি মস্কো লিখিতভাবে চায়। এমনকি সোভিয়েত ইউনিয়নের সাবেক এই প্রদেশে ন্যাটোর সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করা হবে না; এমন প্রতিশ্রুতিও চায় রাশিয়া। গত বছরের শেষের দিকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ফোনালাপের আগে-পরে বিভিন্ন সময় মস্কো এই দাবি সামনে আনে। অবশ্য বাইডেন প্রশাসন স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, রাশিয়ার এই দাবিগুলো কার্যকর হতে পারে না। অবশেষে রাশিয়ার এই দাবির বিষয়ে বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে জবাব দেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। একইসঙ্গে ইউক্রেন সংকট নিরসনে রাশিয়ার জন্য কূটনৈতিক পথও খোলা রাখার কথা জানিয়েছে ওয়াশিংটন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘কূটনৈতিক পথে’ আসার আহ্বান জানাচ্ছেন, আর রাশিয়ার তা গ্রহণ করা উচিত। ব্লিংকেন বলেছেন, তার দেশের মূল নীতিতে কোনো অস্পষ্টতা নেই। যুক্তরাষ্ট্র একই সঙ্গে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং ন্যাটোর মতো কোনো সামরিক জোটে যোগ দেওয়ার অধিকার রক্ষার পক্ষে। বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার আন্তরিকতা নিয়ে কারও সন্দেহ থাকা উচিত নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র একইসঙ্গে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়ে সমান মনোযোগ দিচ্ছে, যাতে তারা রাশিয়ার সম্ভাব্য আগ্রাসন মোকাবেলা করতে পারে। বিষয়টি এখন নির্ভর করছে রাশিয়ার ওপর, তারাই ঠিক করবে, তারা কীভাবে সাড়া দেবে। যে সিদ্ধান্তই তারা নিক, আমরা প্রস্তুত আছি।’ রাশিয়ার একজন মন্ত্রী বলেছেন, ন্যাটের মাধ্যমে যে জবাব যুক্তরাষ্ট্র দিয়েছে, তা নিয়ে তারা আলোচনা করবেন।