শেখ নাজমুল: এলজিইডি এর অধীনে খুলনা বিভাগীয় পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান এর ঘুষ বাণিজ্যের অতিষ্ঠ ঠিকাদারগণ। এছাড়া তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতির মাধ্যমে সরকারের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ পাওয়া গেছে। সূত্রে জানা যায়- স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এর নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, তিনি চাকুরী জীবনে উপজেলা সরকারী প্রকৌশলী, নির্বাহী প্রকৌশলী, প্রকল্প পরিচালক থাকা অবস্থায় নানান অনিয়ম ও দূর্নীতি করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন।
তিনি তার অধীনে প্রকল্পের রাস্তা-কালভার্ট সহ একাধিক নির্মাণ কাজের জন্য ঠিকাদারদের সাথে আতাত করে মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেওয়া, নিম্নমানের কাজ করে ঘুষ গ্রহণ গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া সবখানে ঘুপচি টেন্ডার করে মোটা অংকের টাকা নিয়ে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অফিস মেরামত ও অফিসের আনুসাঙ্গিক খরচের টাকা ভুয়া বিল ভাউচার বানিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন ও অন্যান্য যান্ত্রিক সামগ্রী মেরামত দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা আত্মসাৎ করেছেন যা তদন্ত করলে তার অনিয়ম, দূর্নীতি প্রমাণিত হবে। প্রকল্প পরিচালক হওয়ার পর তার দূর্নীতি আরও বেড়ে যায়।
পেটে যাবে
একাধিক সূত্রে জানা গেছে খুলনা বিভাগ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে গত ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরের মেসার্স রেবা কনষ্ট্রাকশন কে সাতক্ষীরা সদর জোরদিয়া শেখপাড়া জিপিএস-জোরদিয়া শেখপাড়া ৮১,৮১,৮০৯.৭০ টাকার নতুন রাস্তা নির্মাণের জন্য ঘুপছি টেন্ডার করে কার্যাদেশ প্রদান করেন। কার্যাদেশের কাজ সমাপ্তির সময়সীমা ০১-০৮-২০১৯ ইং হইতে ৩০-০৭-২০২০ ইং অর্থাৎ ১২ মাসের ভিতরে কাজ সম্পন্ন করার চুক্তিপত্র করলে শুধুমাত্র প্রকল্প পরিচালক এর অনৈতিক ঘুষ দাবীর কারনে আজও পর্যন্ত উক্ত কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। খোজ নিয়ে জানা যায় দীর্ঘদিন উক্ত রাস্তার মাটি খুড়ে ফেলে রাখেন, যার ফলে অত্র এলাকার জনসাধারণের চলাচলের ব্যাপক দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
সম্প্রতি উক্ত রাস্তার কাজ শুরু করেছে ঠিকাদার কর্তৃক। উক্ত কাজের বর্তমানে রাস্তায় অতি নিম্নমানের বালি ফেলে ২নং ইটের খোয়া দিয়ে রাস্তার কাজ শুরু করেছেন এছাড়া রাস্তার পাশের্^ একাধিক পুকুর থাকায় পুকুরের পাড় মজবুত না করে কাজ চলমান রয়েছে। ঠিকাদার কর্তৃক অতি নিম্নমানের কাজ করাতে এলাকাবাসী ঠিকাদারকে ক্রুটিপূর্ণ কাজ করার অভিযোগ জানালে কোন কর্ণপাত করেননি। ঠিকাদার এলাকাবাসীকে জানান প্রকল্পের পিডিসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদেরকে ১০% ঘুষ দিয়ে কাজ শুরু করেছি। প্রকল্পের অধীনে একাধিক জেলায় কাজের বিষয়ে খোজ নিয়ে জানা যায় ইতিমধ্যে ছোট ছোট কাজ শেষ হয়েছে, কিন্তু ঐসব প্রকল্পের কাজের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যাবে না বলে সূত্রে জানা যায়।
গোপন টেন্ডার করে ভুয়া কার্যাদেশ দিয়ে প্রায় ৫০ ভাগ টাকা প্রকল্প পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান আত্মসাৎ করেছেন। চলমান প্রকল্পের শুরু থেকে জনবল নিয়োগ, প্রকল্পের কেনাকাটা, আনুষাঙ্গিক খরচে ব্যাপক অনিয়ম করেছে তিনি। জনবল নিয়োগে প্রায় কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছে। প্রকল্পের কেনাকাটা পণ্যের মূল্য বহুগুণ বাড়িয়ে, প্রয়োজনের তুলনায় বেশী পণ্য ক্রয় দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন, যা তদন্ত করলে প্রমাণ পাওয়া যাবে। আনুষাঙ্গিক খাতে বরাদ্দের ২৫ ভাগ টাকার পণ্য কিনেছে। বাকী টাকা ভুয়া বিল ভাউচার, অতিরিক্ত মূল্য ও প্রয়োজনের বেশী পণ্য ক্রয় দেখিয়ে ৭০-৭৫ ভাগ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এভাবেই রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছেন প্রকল্প পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান। যা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, দূর্নীতি কমিশন দুদক কর্তৃক উচ্চ পর্যায়ে তদন্ত করলে অবৈধ সম্পদ ও থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসবে বলে মনে করেন প্রধান প্রকৌশলী কার্যালয়ের অনেক কর্মকর্তাগণ। উক্ত অভিযোগের সত্যতা জানার জন্য প্রকল্প পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান ফোন দিয়ে জানতে চাইলে সকল অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবী করেন।