বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) অধীনে কুমিল্লা, চাঁদপুর, বি-বাড়িয়া জেলা সেচ উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (চ:দা:) এর বিরুদ্ধে সীমাহীন দূর্নীতির একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি বিভিন্ন দপ্তরে দাখিনাকৃত কয়েকটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে। জানা যায় প্রকল্পের অধীনে তিনি জেলাতে বাড়িক পাইপ লাইন লাগানোর নামে অতি নিম্নমানের বাড়িক পাইপ লাগিয়ে তিনি প্রায় ৩০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। উক্ত বাড়িক পাইপগুলো সেচ দেওয়ার জন্য অনুপযোগী, কৃষকদের কোন সুফল পান নি। কারন বাড়িক পাইপগুলো বসানোর পরেই পাইপগুলো ফেটে গিয়ে অকেজো হয়ে পড়েছে। এতে করে সরকারের বিপুল পরিমাণের অর্থ অপচয় হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায় উক্ত প্রকল্পের আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে ১৯ জন জনবল নিয়োগ সম্পন্ন করেন। তার মধ্যে ১৫ জনই তার নিজ উপজেলা জামালপুরের এবং আত্মীয়-স্বজন। এই নিয়োগ দিয়ে ব্যাপক স্বজনপ্রীতি সহ সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূতভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএডিসি’র একাধিক কর্মকর্তাগণ আজকের সংবাদকে জানান প্রকল্প পরিচালক মিজানুর রহমান এর অধীনে সকল অফিসার ও স্টাফদেরকে প্রভাবশালী স্থানীয় ঠিকাদারদের মাধ্যমে জিম্মি করে রেখেছেন। পিডির অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। প্রকল্পের অধীনে ইউনিট অফিসগুলো মেরামত না করে ও বাড়িক পাইপগুলো মেরামত না করে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা আত্মসাত করেছেন।
পিডি মিজানুর রহমান যা ভাউচার যাচাই-বাছাই করলে প্রমাণিত হবে। তার সিন্ডিকেটের মাধ্যম ছাড়া অন্য কোন ঠিকাদার কাজ পাওয়া কঠিন ব্যাপার। তার মনোনীত ঠিকাদারগণ ১৫% হইতে ২০% ঘুষ নিয়ে থাকেন। তাঁর মনোনীত ঠিকাদারকে গোপনে এস্টিমেট দর প্রদান করে কাজ পাইয়ে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। যার কারণে বিএডিসির অন্তর্ভুক্ত যোগ্য ঠিকাদারগণ কাজ হইতে বঞ্চিত হচ্ছেন। বিগত সময়ে পিডি মিজানুর রহমান ১৩ জনকে ডিঙিয়ে তার অবৈধ টাকার প্রভাবে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী চলতি দায়িত্ব পদটি বাগিয়ে নেন।
প্রকাশ থাকে যে, তার অধীনে কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে বলে থাকেন মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরকে ম্যানেজ করে এই পদটি বাগিয়ে নিয়েছেন। বিগত সময়ে প্রকল্পের বীজ গোডাউন নির্মাণ প্রকল্পের প্রকুমেন্ট স্পেশালিস্ট অফিসার থাকাকালীন দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছিলেন তিনি। যেমন- গাজীপুর, টাঙ্গাইলসহ একাধিক জেলায় ব্রিজ গোডাউন নির্মাণ করেছিলেন অতি নিম্নমানের। যার কারণে বর্তমান উক্ত বীজ গোডাউন গুলো অকেজো হয়ে পড়ে আছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
এভাবে অবৈধ পন্থায় কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন প্রকল্প পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী চলতি দায়িত্ব মো: মিজানুর রহমান। তার অবৈধ টাকা দিয়ে নিজ দেশের বাড়ি জামালপুর জেলা মেলান্দহ উপজেলায় বিলাসবহুল বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এছাড়া রাজধানীর লালমাটিয়া, মালিবাগ, সিদ্বেশ্বরীতে ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন। সাভার ও গাজীপুরে ২টি বাগানবাড়ি রয়েছে। এছাড়াও নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকা সম্পদের মালিক বনে গেছেন তিনি। উক্ত অভিযোগের সত্যতা জানার জন্য প্রকল্প পরিচালক মিজানুর রহমানের মোবাইল ফোনে ফোন দিলে কেটে দেন। যার ফলে তার কোনো মতামত পাওয়া যায়নি।