বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। একইসঙ্গে তার দণ্ডাদেশ মওকুফের জন্য পরীক্ষা করা হচ্ছে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
বুধবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে ছিলেন খালেদা জিয়া। গত বছর ২৫ মার্চ ৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়াকে ২৫ মাস কারাভোগের পর সরকার শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য দণ্ড স্থগিত করে। এরপর দ্বিতীয় দফায় ফের ছয় মাস সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয়। সে মেয়াদ আগামী ২৫ মার্চ শেষ হচ্ছে।
খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার এ সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য মঙ্গলবার আবেদন করেছেন। একইসঙ্গে দণ্ডাদেশ মওকুফ করা যায় কিনা সে প্রসঙ্গেও তারা আর্জি জানিয়েছেন বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, তারা আবার সময়টা (সাজা স্থগিত) এক্সটেনশন (বাড়ানো) করার জন্য, আরও কিছু শর্ত শিথিল করে এক্সটেনশন চেয়েছে। আমরা এখন সেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে… উনি যা চেয়েছেন, এটা যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত দেওয়ার জন্য প্রক্রিয়া করা হচ্ছে।
আবেদনে তারা কী চেয়েছেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ঠিক সেরকম তারা তো তাদের পত্রে… শর্ত শিথিল করে করোনাকালীন চিকিৎসা নিতে পারেনি, সেটা জানিয়েছেন এবং তার দণ্ডাদেশ মওকুফ করা যায় কিনা, সেটা সম্পর্কেও তারা বলেছেন।’
এখন পরবর্তী প্রক্রিয়াটা কী -এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তো বলছি এটা আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো, আইন মন্ত্রণালয় থেকে মতামত এলে আমাদের যথাযোগ্যদের সঙ্গে আলাপ করে করে তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
চিঠিটা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা সবেমাত্র তো গতকালকে এলো, পাঠানো হবে।’
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হলেন মানবতার জননী। তিনি যখনই কাউকে দেখেন এরকম অবস্থায়, তখন তো তিনি সবসময় তার সহযোগিতা করে থাকেন। এক্ষেত্রেও তিনি (প্রধানমন্ত্রী) তাকে (খালেদা জিয়া) উন্নত চিকিৎসা যাতে তার বাসায় থেকে পায় এবং সে যেন তার যে অন্যান্য অসুবিধাগুলো ছিল, চিকিৎসা যেন আরও সুন্দরভাবে পায়, সেজন্যই তিনি শর্তসাপেক্ষে বাসায় থাকার অনুমতির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।’
তারা বিদেশে যাওয়ার আবেদন করেছেন কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা সব সময় চিঠিতে লেখা থাকে। রেফারেন্সে থাকে বিদেশে যাওয়ার, সেরকম লেখা থাকে, কিন্তু উনিতো এখনো কারাগারেই রয়েছেন। তার বাড়িটা এখন কারাগার হিসেবেই তিনি এখানে আছেন।’
সাজা মওকুফের কোনো সুযোগ আইনগতভাবে আছে কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘সেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য তারা চেয়েছে, আমরা পরীক্ষা করে দেখছি। আমি তো আগেই বলেছি আমাদের প্রধানমন্ত্রী সব সময় যতখানি সম্ভব সেটুকু ব্যবস্থা করছেন।’