বন রক্ষা ও চোরাই কাঠ পাচার রোধে গঠিত “বন বিশেষ টহলদল” মহৎ উদ্যোগ ভেস্তে যেতে বসেছে। কাঠ চোরা কারবারিদের কাছ থেকে বিশেষ সুবিধা নিয়ে কথিত “লাইন” (চুক্তি ভিত্তিক চোরাই ভাবে কাঠ পাচারের অঘোষিত অনুমতি) দিয়ে কাঠ পাচারে সহায়তা দিচ্ছে খোদ কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের বিশেষ টহলদল দলের ইনচার্জ (ওসি) কামরুল হাসান ফরেষ্টার।
বান্দরবান পাল্পউড প্ল্যান্টেশন বিভাগ থেকে বদলী হয়ে কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগে আসেন তিনি।গত ১০ মার্চ বনবিশেষ টহল দলের ইনচার্জ (ওসি) এর দায়িত্ব নেন কামরুল। ১১ মার্চ থেকে শুরু করেন জেলার কাঠ চোরাকারবারী সিন্ডিকেটের সাথে যোগাযোগ। একটি সুত্র জানিয়েছেন, ওসি কামরুলের সাথে প্রথম বৈঠক হয় শহরের বাজারঘাটায় চিরাই কাঠের চোরাই মার্কেট ” আন সাইজ মার্কেট” এ। আনসাইজ মার্কেটে ২৫ জনের চোরাই কাঠ ব্যবসায়ীর সাথে প্রকাশ্যে বৈঠকও করেন স্পেশাল টীমের ওসি কামরুল। মাসিক মাসোহারারা টার্গেটও করে দেন তিনি।
বাজারঘাটা বিশাল আন সাইজ মার্কেটের এক ব্যবসায়ী জানান, বাজার ঘাটার আন সাইজ মার্কেট নামে পরিচিত চিরাই কাঠের হাটে বিশেষ করে লাশের কফিনের কাঠ বিক্রি করা হয়। এছাড়াও শহরে স্বল্প মুল্যে বিভিন্ন বাসাবাড়ির চিরাই কাঠ সরবরাহ দিয়ে আসছে। কাঠগুলো শতভাগ বৈধ নয় দাবী করে তিনি বলেন, কক্সবাজার জেলার ব্যক্তি মালিকানাধীন বসত বাড়ীর গাছ ছাড়াও রামু, নাইক্ষ্যংছড়ি, জোয়ারিয়া নালা,কালিরছড়া, ঈদগাঁও’র আশপাশের এলাকার কাঠ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা।
এদিকে, টহলদলের ওসি কামরুল দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই নাইক্ষ্যংছড়ি, জোয়ারিয়া নালা, কালিরছড়া, খরুলিয়া, বাংলাবাজার, পিএমখসলী ঈদগাহ, ডুলাহাজারা, চকরিয়া ভাঙ্গার মুখ, ঈদগড়ের কাঠ পাচারকারী, বালি ও মাট পাচারকারীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করে যাচ্ছেন। এছাড়াও তার সাথে চকরিয়া, ঈদগাঁহ, বাইশারি, নাইক্ষংছড়ি, ঈদগড় ও খরুলিয়া এবং বাংলাবাজার স্লুইস এলাকার কাঠ ব্যবসায়ীরাও তার সাথে আগাম যোগাযোগ রক্ষা করছেন।
তিনি ইতোপূর্বে কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের হিমছড়ি ও কস্তুরাঘাটে চাকরি করার কারণে কাঠ ব্যবসায়ীরা তার পূর্বপরিচিত বলে যোগাযোগের ক্ষেত্রে বেগপেতে হচ্ছে না। অপর একটি সুত্র জানিয়েছেন, বনবিশেষ টহল দলের ইনচার্জের দায়িত্ব নেওয়ার একমাস হতে চলেছে, কিন্ত কাঠ পাচার রোধে তেমন সাফল্য দেখাতে পারেননি। তবে কালিরছড়া এলাকা থেকে একটি মাত্র বালুভর্তি ডাম্পার আটক করেন। প্রতি রাতে সড়ক পথে কাঠ পাচার অব্যাহত রয়েছে। এব্যাপারে বনবিশেষ টহল দলের ইনচার্জ ওসি কামরুলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নতুন দায়িত্ব নিয়েছি, কাঠ পাচার বন্দে চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছি।