গণপূর্ত অধিদপ্তরের আজিমপুর ডিভিশনে শুক্রবার রাতে নির্মাণাধীন ২০ তলা জাজেস কমপ্লেক্সের ১০ তলা থেকে ৪ শ্রমিক পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় কবলিত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে আজিমপুর ডিভিশন তথা সার্কেল-৪ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী উজির আলী নিশ্চিত করেন। এঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং বন্ধের দিন থাকায় কোন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি বলেও তিনি জানান। আহত ৩ শ্রমিকের মধ্যে গুরুতর আহত হয়েছেন আরিফুল। আর মৃত শ্রমিকের নাম নাজমুল (২৫)।
লালবাগ থানার এসআই নতুন মিয়া জানান, রাত ১২ টা ৪০ মিনিটে নিখোঁজ শ্রমিকের মৃত্যুদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে পাঠানো হয়েছে।
শ্রমিক দুর্ঘটনার সময় সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা ঐ ভবনের আশেপাশে উপস্থিত ছিলেন না কারন হিসেবে তারা আজকের সংবাদকে জানায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দিন রাত কাজ করে আর আমাদের পক্ষে তো আর দিন-রাত কাজ করা সম্ভব নয়। দায়িত্বপ্রাপ্ত কেউ উপস্থিত না থাকার কারনে ভবন বা ভবনের কোন অংশিক কাজে যদি ঠিকাদার গাফিলতি করে আর এভাবে ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হলে সরকারি অর্থের অপচয় হবে এ প্রশ্নটি সবাই এড়িয়ে যান। উপ-সহকারী প্রকৌশলী,উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীগণ জানান, দুর্ঘটনার সময় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন উপস্থিত থেকে কাজ করিয়েছে এবং তাদের সহকারী ঠিকাদারও নিয়োগ দেয়া আছে তারাই বলতে পারবে।
অন্যান্য শ্রমিকরা ভয়ে মুখ খুলতে চাইছে না। ভবন থেকে দুরে এসে এক শ্রমিক আজকের সংবাদকে জানায়, সাব কন্ট্রাকটর বলে দিয়েছে যে মুখ খুলবে সে বিপদে পড়বে ঠিকাদার আর ইঞ্জিনিয়ার স্যারদের নিয়া কোন কথা বলা যাবে না। কেন বাধা করেছে তখন ঐ শ্রমিক বলে,আপনারা একটু খোজেঁন তাইলে পাবেন। আমারে বিপদে ফেইলেন না।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০ তলা জাজেজ ভবনটির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নুরানী কনস্ট্রাকশন। এই প্রতিষ্ঠানটির শুধু আজিমপুর ডিভিশনে আরো কিছু বড় প্রকল্পের কাজ চলমান। প্রতিষ্ঠানটির সাথে অনেক উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সু-সম্পর্কের কথা জানা যায়। এবিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী ইলিয়াস হোসেনের সাথে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, লিফটের কাজ করছিল ওভার লোডের কারনে দুর্ঘটনাটি ঘটে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কেউ আপনারা উপস্থিত না থাকার পরেও কিভাবে কাজ চলে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন আমাদের আরো অনেক কাজ থাকে সবসময় এক সাইটে তো থাকা সম্ভব নয় আর ঘটনাটি রাতে ঘটেছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোক দায়িত্বে ছিল। তারা থাকার পরেও কিভাবে ওভার লোড হলো এর জবাবে তিনি বলেন প্রত্যেক ফ্লোরে ফ্লোরে কি লোক বসায় রাখবো, ওভার লোডের কারনে দুর্ঘটনা ঘটার দায়ভার কার প্রশ্ন করলে তিনি ফোনটি কেটে দেন।