ফ্রান্সের মধ্যপন্থী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ আরো পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকবেন নাকি কট্টর ডানপন্থী মারি লি পেন ক্ষমতায় বসবেন, তা নির্ধারণ করতে ভোট দিচ্ছে ফ্রান্সের ভোটাররা। বিবিসি জানিয়েছে, নির্বাচনী প্রচার চালানোর পর জনপ্রিয়তায় ৪৪ বছর বয়সী ম্যাখোঁর খুব কাছাকাছিই রয়েছেন লি পেন। মতামত জরিপও একই কথা বলছে। সে কারণে নির্বাচনের ফল বদলে দিতে পারে সংশয়ে থাকা ভোটাররা। এ কারণেই প্রচারণায় এবার এত কাদা ছোড়াছুড়ি চলেছে।
ম্যাখোঁর বিরোধিতাকারীরা তাকে অহঙ্কারী এবং ধনীদের প্রেসিডেন্ট বলে অভিহিত করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সম্পর্ক থাকারও অভিযোগ রয়েছে। পরিবর্তনের আশ্বাস দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন ম্যাখোঁ। তবে তাঁর বিরুদ্ধে এযাবৎ নানা অভিযোগ উঠেছে। তার শাসনামলে বুবার বিক্ষোভ হয়েছে। করোনা মহামারির মধ্যে তীব্র বিক্ষোভের পর এখন জীবনযাত্রার ঊর্ধ্বমুখী খরচ নিয়ে কথা উঠছে।
দেশটিতে এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যে বিষয়গুলো প্রভাব ফেলেছে, সেগুলোর মধ্যে এক নম্বরে রয়েছে জীবনযাত্রার ঊর্ধ্বমুখী খরচ―বিদ্যুৎ বিল থেকে শুরু করে খাবারদাবার কেনা ও গাড়ির জ্বালানি পর্যন্ত প্রায় সব কিছুর দাম বেড়েছে।
লি পেনের নির্বাচনী দলের চোখে এ বিষয় ধরা পড়তে খুব একটা সময় লাগেনি। তাদের নির্বাচনী শিবির থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে এমন একটি সরকার গঠনের, যা জীবনযাত্রার ঊর্ধ্বমুখী খরচ ঠেকাতে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলবে। একদম সোজাসাপ্টা ভাষায় লি পেন ভোটারদের বলে দিয়েছেন, ‘হয় ম্যাখোঁ, নয় ফ্রান্স’কে বেছে নিতে হবে।
অন্যদিকে ম্যাখোঁও বসে নেই। তিনিও জানিয়ে দিয়েছেন, ‘এই নির্বাচন এক ধরনের গণভোট, ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি, ইউরোপের প্রতি। ’ ম্যাখোঁর দাবি, ‘‘লি পেনের ‘ইউরোপীয় রাষ্ট্রের’ ধারণা আদতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইতি টানবে। ”
লি পেনের কথা, ফ্রান্স গত পাঁচ বছর বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে গেছে। নাগরিকদের শান্তি ও সম্মান পুনরুদ্ধার করার সুযোগ এসেছে। তিনি বলেন, ‘একই মানুষ এবং ওই একই ঘরানার শাসন দিয়ে তা আমরা পাব না। ’ তবে দুই পক্ষই সবচেয়ে বড় যে সমস্যাটিতে ভুগছে, তা হলো প্রচুর ভোটার শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সংশয়ে রয়েছে। তারা নির্বাচনে হয় সাদা ব্যালট ফেলবে, আর না হয় ভোটই দেবে না।
জরিপ বলছে, ১৯৬৯ সালের পর এবারই সবচেয়ে কম ভোট পড়বে। চূড়ান্ত জরিপ বলছে, ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ৫৩ শতাংশ ও ৫৭ শতাংশ ভোটে জিতবেন। এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে বামপন্থী রাজনীতিক জঁ-ল্যুক-মেলঁশোঁর ৭৭ লাখ ভোটার। শুক্রবারের এক ইপসোস জরিপ বলছে, প্রথম পর্বে ম্যাখোঁকে ভোট দেওয়া ৪৮ শতাংশ চূড়ান্ত পর্বে এসে কাউকেই আর সমর্থন করছে না।