নোয়াখালীর কৃতি সন্তান, বরেণ্য রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের ৩ দফা জানাজা নোয়াখালীতে অনুষ্ঠিত হবার পর কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার মানিকপুর গ্রামে পিতা মাতার কবরের পাশে সমাহিত করা হয়।
এর আগে, দুপুর ৩টা ১০ মিনিটের দিকে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে কবিরহাট ডিগ্রি কলেজ প্রাঙ্গণে মওদুদ আহমদের মরদেহ আনা হয়। এরপর নিজ উপজেলা কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট সরকারি মুজিব কলেজ মাঠে এবং সর্বশেষ মানিকপুর গ্রামের বাড়ির সন্মুখে জানাজা শেষে পিতা মাতার কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়েছে।
শুক্রবার দুপুর ৩টা ৩৫ মিনিটের দিকে নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার কবিরহাট ডিগ্রি কলেজ মাঠে তার তৃতীয় জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল ৫টায় কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট সরকারি মুজিব মহাবিদ্যালয় মাঠে নামাজে জানাজায় বসুর হাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।
কবিরহাটে জানাজায় অংশ নেন নোয়াখালী ৪ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধরী, কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, কেন্দ্র বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য তাবিথ আউয়াল, আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন, জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার বিএসসি, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান, কবিরহাট পৌরসভার মেয়র জহিরুল হক রায়হান, কবিরহাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুর রহিম চেয়ারম্যান, সাধারণ সম্পাদক লিটন চৌধুরী, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান রিপন, কবিরহাট পৌরসভা বিএনপির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মঞ্জুসহ দলীয় নেতাকর্মী ও সর্বস্তরের জনগণ।
শুক্রবার রাজধানীতে দুই দফা জানাজার পর তার নিজ এলাকা নোয়াখালীর কবিরহাটও কোম্পানীগঞ্জে আরো ৩টি জানাজা শেষে তার ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে বাবা-মায়ের পাশে সমায়িত করা হবে তাকে।
উল্লেখ্য, ব্যারিস্টার মওদুদের মরদেহ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকায় এসে পৌঁছায়। ঢাকায় পৌঁছানোর পর বিমানবন্দর থেকে মরদেহ ঢাকার একটি হাসপাতালের হিমঘরে নেয়া হয়।
মওদুদ আহমদের ব্যক্তিগত সহকারী মমিনুর রহমান সুজন জানান, ঢাকার আনুষ্ঠানিকতা শেষে হেলিকপ্টার যোগে মরদেহ কবিরহাট উপজেলায় নিয়ে আসা হয়। বাদ জুম্মা কবিরহাট সরকারি কলেজ মাঠ, বিকেল ৫টায় বসুরহাট সরকারি কলেজ মাঠ, ৫টা ৩০ মিনিটে মানিকপুরের নিজ বাড়ির দরজায় জানাজা শেষে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে সমায়িত করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, মৃত্যুর আগে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বাবা-মায়ের কবরের পাশে সমায়িত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে গেছেন। তার ইচ্ছা অনুযায়ী পরিবারের পক্ষ থেকে সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে মওদুদ আহমদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশের পাশাপাশি তার নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের মানুষ শোকাহত পরিবেশ সৃষ্টি হয়। অনেকে ফেসবুকে আবেগঘন স্ট্যাটাস নিয়ে তার রুহের মাগফেরাত করেন। প্রিয় নেতার মৃত্যু স্তব্ধ করে দিয়েছে কোম্পানীগঞ্জবাসীকে। নোয়াখালী-৫ আসন (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট) থেকেই ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ নেতা মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে সিঙ্গাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী হাসনা জসিম উদ্দিন মওদুদ, মেয়ে আনা তাসপিয়া মওদুদ, ২ ভাই- ২ বোন সহ অসংখ্য গুণগাহী রেখে গেছেন।