শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মহিন্দা রাজাপাকসে বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর পুরো জীবন বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণে উৎসর্গ করেছেন।
শুক্রবার (১৯ মার্চ) বিকেলে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এমন একজন নীতিবান ব্যক্তি ছিলেন, যিনি বাঙালি জনগণ, তাদের ভাষা এবং তাদের কল্যাণের জন্য তাঁর পুরো জীবন উৎসর্গ করেছেন।’
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী কে এম খালিদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।
বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান একাত্তরে নতুন জাতি গঠনের জন্য তাঁর স্বাধীনতা সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর ছিলেন।
রাজাপাকসে বলেন, ‘দুর্ভাগ্যক্রমে তিনি তাঁর লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারেননি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যে বিরাট ক্ষতি হয়েছিল তা আমি অনুধাবন পারি। সেদিন স্বাধীনতার জনক এক বীরকে হারিয়েছে দেশ।’
তিনি বলেন, এই অন্তরায় সত্ত্বেও, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়ন অব্যাহত রেখেছেন। এটি বঙ্গবন্ধুর প্রতি সর্বোত্তম সম্মান।
দুই প্রতিবেশীর ঐতিহাসিক সম্পর্কের কথা স্মরণ করে রাজাপাকসে বলেন, শ্রীলঙ্কা প্রথম দেশ যারা ১৯৭১ সালে একটি নতুন দেশ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিল।
তিনি বলেন, ‘এই একবিংশ শতাব্দীতে এশীয় সমৃদ্ধির মহান আকাক্ষা নিয়ে তাদের পূর্বপুরুষরা স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যে অপরিসীম ত্যাগ স্বীকার করেছেন সে সম্পর্কে আমাদের নতুন প্রজন্মের সচেতন হওয়া দরকার।’
তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কা প্রতিবেশী ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসাবে বৃহত্তর স্বাধীনতা ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সবসময় বাংলাদেশের পাশে রয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর বরাত দিয়ে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী বলেন, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ উভয়ের অর্থনৈতিক রূপান্তরের উদ্দেশ্য হলো দারিদ্র্য বিমোচন এবং উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জন।
তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগরে ব্লু ইকোনোমি উন্নয়নে বাংলাদেশের প্রস্তাব আমাদের সমুদ্র বিষয়ক দৃষ্টিভঙ্গিকে নিরন্তর অনুপ্রাণিত করে।
বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তির কেন্দ্র হিসাবে বিবেচনা করা হয় উল্লেখ করে রাজাপাকসে বলেন, বাংলাদেশ তার দেশের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অংশীদার।
কৃষিতে বাংলাদেশের সাফল্য শ্রীলঙ্কাকে আকর্ষণ করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এ লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বিনির্মাণ অব্যাহত রেখেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর সরকার এবং বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা এবং ঐকান্তিক ও উষ্ণ শুভকামনা জানান শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী।