বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ধানের উৎপাদন অনেক ভালো হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, বোরো ধানের আবাদ লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি হয়েছে। একই সঙ্গে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য এ বছর হাইব্রিড ধানের আবাদ বৃদ্ধিতে গুরুত্ব দেয়া হয়েছিল, সেটিও লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে।
রোববার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষ থেকে অনলাইনে বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের (এডিপি) বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমাদের ছোটো দেশে জনসংখ্যা অনেক বেশি, যা ক্রমশ বাড়ছে। অন্যদিকে শিল্পায়ন, নগরায়ণসহ নানা কারণে চাষের জমি দিন দিন কমছে। এই কম জমি থেকেই আমাদের মূল খাদ্য চাল উৎপাদন করতে হবে, চালে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে। একই সঙ্গে সব ফসলে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, যেটি খুবই চ্যালেঞ্জিং।
তিনি বলেন, ভুট্টা, আলু, শাকসবজি, তেল, ডাল ও মসলা জাতীয় ফসলের চাষ ও উৎপাদন বাড়াতে চেষ্টা চলছে। তবে জমি স্বল্পতার কারণে একটির আবাদ বাড়াতে গেলে, অন্যটির কমে যায়। কাজেই, সব ফসলের উৎপাদন অব্যাহত রাখা ও তা আরো বৃদ্ধি করতে হলে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে হবে। উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে গবেষক-বিজ্ঞানী, সম্প্রসারণকর্মীসহ সবাইকে আরো মনোযোগী হতে হবে।
এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী, এ বছর বোরোতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪৮ লাখ ৫ হাজার ২০০ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ৪৮ লাখ ৮৩ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে হাইব্রিড ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১১ লাখ ৪ হাজার ৬৩৩ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ১২ লাখ ১৩ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে।
উল্লেখ্য, এ বছর বোরো ধানের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ সহায়তা বাবদ প্রায় ১৪৫ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের ধানের চাষ বাড়াতে দেয়া হয়েছে প্রায় ৮৫ কোটি টাকার প্রণোদনা। এ বছর ২ লাখ হেক্টর বেশি জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল।
এছাড়া চলমান ২০২০-২১ অর্থবছরের এডিপিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় ৬৮টি প্রকল্পের অনুকূলে মোট ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। ফেব্রুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি হয়েছে ৪০.৩৯%। যেখানে জাতীয় গড় অগ্রগতি ৩৩.৮৩%।
সভা সঞ্চালনা করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম। এতে মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংস্থাপ্রধানসহ প্রকল্প পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।