ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী ২৬ ও ২৭ মার্চ দু’দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশে আসছেন। সফরকালে তিনি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার মতুয়া সম্প্রদায়ের তীর্থস্থান ওড়াকান্দি ঠাকুর বাড়ি পরিদর্শন করার কথা রয়েছে। তার সফরকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সেখানে থাকবে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এখন চলছে নিরাপত্তা মহড়া।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এ সফরকে ঘিরে মতুয়াদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেছে। মোদিকে উলুধ্বনি, শঙ্খ ও ডঙ্কা-কাঁসা বাজিয়ে বরণ করে নেবেন মতুয়ারা। এ লক্ষ্যে সব প্রস্ততি সম্পন্ন করা হয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী ২৭ মার্চ সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে টুঙ্গিপাড়ায় যাবেন বলে জানা গেছে। সেখানে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধ পরিদর্শন, পুষ্পস্তবক অর্পণ ও গাছের চারা রোপণ করবেন। এরপর বেলা ১১ টা ৩৫ মিনিটে তিনি কাশিয়ানীর ওড়াকান্দি ঠাকুর বাড়ি মন্দির পরিদর্শনে যাবেন। সেখানে তিনি হরি মন্দিরে পুজা ও মতুয়া সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় করবেন।
এ উপলক্ষে ওড়াকান্দিতে তৈরি হয়েছে চারটি পৃথক হেলিপ্যাড। সংস্কার করা হচ্ছে রাস্তাঘাট। ঘরবাড়িতে চলছে রং-চুনকাম ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজ। স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ঠাকুর বাড়িতে শ্রম দিচ্ছেন মতুয়া ভক্তরা।
কাশিয়ানী উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান জানান, ওড়াকান্দি হরিচাঁদ ঠাকুরের বাড়িতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকে ঘিরে জরুরি ভিত্তিতে চারটি হেলিপ্যাড, ঠাকুরবাড়ির অভ্যন্তরে ৫ শ’ মিটার এইচবিবি সড়ক, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের তিলছড়া থেকে ঠাকুরবাড়ি পর্যন্ত ৮ কিলোমিটারের বেশি পাকা সড়ক সংস্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া তিলছড়া রাহুথড় সড়ক থেকে ঠাকুরবাড়ি প্রবেশের জন্য ৬শ’ মিটার পাকা সড়ক সংস্কারের কাজ চলছে।
ঠাকুরবাড়ির অন্যতম সেবায়েত পদ্মনাভ ঠাকুর বলেন, নরেন্দ্র মোদির সফরকে কেন্দ্র করে সেখানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ নানা আয়োজন শুরু হয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টার থেকে নামার পর হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে আসবেন। সেখানে পূজা শেষে মন্দিরের সামনেই ঠাকুরবাড়ির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
হরিচাঁদ ঠাকুরের ষষ্ঠ পুরুষ ও কাশিয়ানী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সুব্রত ঠাকুর জানান, নরেন্দ্র মোদিকে যথাযথ সম্মানের সঙ্গে বরণ করার সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। একজন গুরুত্বপূর্ণ অতিথিকে বরণ করার জন্য তারা সাধ্যমতো সকল প্রস্তুতি নিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ মতুয়া মহাসংঘের সভাপতি সীমা দেবী ঠাকুর বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী আমাদের এই ঠাকুরবাড়িতে আসছেন, এটা শুধু ঠাকুরবাড়ির গর্বের বিষয় নয়, সকল মতুয়ার কাছে গর্বের বিষয়। তিনি এলে আমরা হিন্দুধর্মীয় মতে উলুধ্বনি, শঙ্খ ও ডঙ্কা-কাঁসা বাজিয়ে তাঁকে স্বাগত জানানোর সব আয়োজনই রেখেছি।’
কাশিয়ানী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আজিজুর রহমান জানান, নিরাপত্তা জন্য সকল প্রস্তুতি রয়েছে। ওই এলাকায় পুলিশি নজরদারী ও টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।
কাশিয়ানীর ইউএনও রথীন্দ্রনাথ রায় বলেন, ‘আমরা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ওড়াকান্দি ভ্রমণের কর্মসূচি পেয়েছি। তাঁর ভ্রমণের প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে’।
গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা জানিয়েছেন, বিদেশি ভিভিআইপির জন্য যে ধরণের প্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন, তা নেয়া হয়েছে’।
সূত্র : বাসস