লক্ষ্মীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনের পাঁচতলার ছাদ থেকে লাফ দিয়ে রাকিব হোসেন (২৭) নামে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন।
বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
রাকিব লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড উত্তর মজুপুর এলাকার বাসিন্দা ও পৌরসভার মোটকা মসজিদ এলাকার ভাঙারি ব্যবসায়ী।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, ব্যস্ত আদালতে হঠাৎ একটি শব্দ শুনতে পায় লোকজন। তাৎক্ষণিক দেখতে পায় জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনের সামনে এক যুবক পড়ে আছে। এ সময় আদালতে উপস্থিত থাকা লোকজন জড়ো হতে থাকে। পরে তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই যুবককে মৃত ঘোষণা করে। খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের লোকজন।
নিহত রাকিবের বড় ভাই সোহেল হোসেন জানান, পারিবারিক কিছু বিষয় নিয়ে সকালে রাকিবকে বকা দেওয়া হয়। পরে সে দোকান থেকে অভিমান করে বের হয়ে আসেন। এরপর রাকিব আত্মহত্যা করেছে বলে খবর পায়।
পুলিশের কোর্ট পরিদর্শক কিশোর কুমার জানান, আদালত ভবনের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন। তার মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আনোয়ার হোসেন বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই রাকিবের মৃত্যু হয়েছে। লাশ মর্গে রয়েছে।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানা পুলশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসীম উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আত্মহত্যার আধা ঘণ্টা আগে নিজের ফেসবুক আইডিতে (রাকিব হোসেন রোমান) ১ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও বার্তা দেন রাকিব। ভিডিওতে তার এ মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয় উল্লেখ করে অনেক ভুল করেছেন জানিয়ে মা-বাবার কাছে ক্ষমা চান।
সেখানে তিনি বলেন, ‘মা আই সজ্ঞানে মইরতে যাইতাছি। আই তামা চুরি করি ন মা। জীবনে অনেক ভুল কইরছি মা। আর মৃত্যুর লাই কেউ দায়ী নাই। আই নিজের ইচ্ছায় যাইতাছি মা। অনেক ভুল কইরছি মা। একটা মাইয়ার জীবনও নষ্ট কইরছি। আইয় সুমাইয়ারে বিয়া কইরছি। বিয়া করি সুখী হইতে পাইরতাছি না। আর কইলজা হাডি যা। আর অ্যাকাউন্টে ৭৫ হাজার টাকা আছে মা। সোহেল ভাইয়ের তন তামা চুরি কইরছি, হেতেনে জানে। হেতেনের তন হেগুন লন লাইগতো ন। বাড়ির ড্রয়ারের মধ্যে আর এটিএম কার্ড আছে।’ মায়ের উদ্দেশ্যে রাকিব হোসেন এটিএম কার্ডের পিন নম্বরও বলেছেন ফেসবুকে লাইভের ভিডিওটিতে।