ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে রাজধানীতে যুব অধিকার পরিষদের বিক্ষোভ মিছিল থেকে আটক ‘শিশুবক্তা’ মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। এরপর তিনি নেত্রকোনার উদ্দেশ্যে রওনা করেন। থানা থেকে বেরিয়ে গাড়িতে চড়েই ফেসবুক লাইভে এসে তাকে ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি ভক্তদের জানান রফিকুল ইসলাম।
লাইভে রফিকুল ইসলাম মাদানি বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ! পুলিশ আমাকে থানায় নেয়ার পর কিছুক্ষণ রেখে ছেড়ে দিয়েছে। যারা আমার আটকের পর প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং খোঁজ-খবর নিয়েছেন, তাদের ধন্যবাদ। ইসলামবিরোধী সব কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে আগামীতেও আমি সাধারণ মানুষের সঙ্গে থাকব।’
জানতে চাইলে পল্টন মডেল থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কাজী আশরাফুল হক বলেন, ‘আটক শিশুবক্তা মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পল্টন থানা থেকে তার অভিভাবক এসে নিয়ে যান।’
রফিকুল ইসলামকে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে কি-না এমন প্রশ্নে এসআই কাজী আশরাফুল হক বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি বলতে পারবো না।’
এর আগে দুপুর ১২টার দিকে মতিঝিল শাপলা চত্বরে ছাত্র অধিকার পরিষদ মিছিল বের করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। আধঘণ্টা ধরে চলা এ সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হন। এসময় শিশুবক্তা রফিকুল ইসলামসহ ১১ জনকে আটক করে পুলিশ।
আটকদের প্রিজনভ্যানে নিয়ে যাওয়ার সময় নুরুজ্জামান নামের একজনের ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে আসেন মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী। ‘মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী সমর্থক’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে লাইভটি শেয়ার করা হয়।
প্রিজনভ্যান থেকে মাত্র ২৯ সেকেন্ডের ওই লাইভে রফিকুল ইসলাম মাদানী বলেন, ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহ, সম্মানিত দেশবাসী আপনারা দেখতে পাচ্ছেন আমাদের পুলিশ প্রিজনভ্যানে নিয়ে এসেছে। এই যে আমাদের আরও কিছু ভাই। আমরা বলবো, আমরা আসলে দেশের বিরুদ্ধে না, ইসলামের বিরুদ্ধে না, আমাদের পুলিশ ভাইয়েরা আহত করেছে, আঘাত করেছে, আমরা তাদের বলবো আমাদের আঘাত করা আর দেশকে আঘাত করা একই কথা। আমরা ইসলামবিরোধী না দেশবিরোধী না, আমরা মোদির বিরুদ্ধে।’
ওই সময় পুলিশের মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মিন্টু কুমার জানিয়েছিলেন, ‘আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে মতিঝিল শাপলা চত্বর এলে পুলিশ সদস্যরা তাদের বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন। এসময় তারা পুলিশের ওপর আক্রমণ শুরু করে। আমাদের বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন, তার মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। এখন পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী রাজধানীর জামিয়া মাদানীয়া বারিধারা মাদরাসায় লেখাপড়া করেন। শারীরিক আকৃতিতে ছোট হওয়ায় তাকে সবাই শিশুবক্তা বলেন এবং এ হিসেবেই পরিচিতি পান তিনি। নেত্রকোনা জেলার পশ্চিম বিলাশপুর সাওতুল হেরা মাদরাসার পরিচালক রফিকুল ইসলাম ২০ দলীয় জোটভুক্ত জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও রাবেতাতুল ওয়ায়েজিনের সঙ্গে যুক্ত আছেন বলেও জানা গেছে।