গাইবান্ধায় বৃষ্টি বিহীন কালবৈশাখি ঝড়ে ভেঙে পড়া গাছ ও ডালের নিচে চাপা পড়ে আহত এক নারীসহ আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় ঝড়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল নারী ও শিশুসহ ১০ জনে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিন।
মৃত ১০ জনের মধ্যে সদর উপজেলায় চার জন, পলাশবাড়ী উপজেলায় তিন জন, ফুলছড়ি উপজেলায় দুই জন ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় এক জন। মৃতরা হলেন- গাইবান্ধা সদর উপজেলার মালিবাড়ি ইউনিয়নের ধনধনি গ্রামের সাহারা বেগম, বাদিয়াখালি ইউনিয়নের সরকারতারি গ্রামের জোসনা রাণী, হরিনসিংহা তিনগাছের তল গ্রামের শিশু মনির মিয়া, আরিফ খাঁ বাসুদেবপুর গ্রামের আরজিনা ও পলাশবাড়ী উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের ডাকেরপাড়া গ্রামের জাহানারা বেগম, একই ইউনিয়নের মোস্তফাপুর গ্রামের গোফ্ফার মিয়া ও মনোহরপুর ইউনিয়নের কুমেদপুর গ্রামের মমতা বেগম, ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের কাতলামারি গ্রামের শিমুলি আকতার ও এরেন্ডাবাড়ি ইউনিয়নের ডাকাতিয়ার চর গ্রামের হাফেজ উদ্দিন এবং সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের কিশামত হলদিয়া গ্রামেন ময়না বেগম।
সর্বশেষ রবিবার রাত ৯টার দিকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতাল থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে সদর উপজেলার বাসুদেবপুর গ্রামের আরজিনা খাতুন মারা যান।
জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন জানান, জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঝড়ে গাছ ভেঙে ও চাপা পড়ে ঘটনাস্থল এবং আহত অবস্থায় এ পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় বিভিন্নস্থানে আহত হয়েছে অন্তত ২৫ জন। তাদেরকে উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকাভিত্তিক ঝড়ো বাতাসে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের পাশাপাশি প্রত্যেক মৃতের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহযোগিতার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়ছে।
সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. আনিছুর রহমান জানান, ঝড়ে চারজনের মৃত্যু ও বিভিন্ন এলাকায় ছোট-বড় কাঁচা প্রায় ২ শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝড়ে হতাহতের ঘটনা এবং ঘরবাড়িসহ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
রবিবারের কালবৈশাখি ঝড়ে গাইবান্ধার চারটি উপজেলার ঘরবাড়ি, গাছপালা ও বৈদ্যুতিক লাইন লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। সোমবার সকাল থেকে ক্ষতিগ্রস্তরা নিজ উদ্যোগে ভেঙে যাওয়া ঘরবাড়ি মেরামত কাজ শুরু করেছেন। যেসব গাছ ভেঙে রাস্তায় পড়েছিল, সেগুলো পরিষ্কার করছেন।
এদিকে বৈদ্যুতিক লাইনের ওপর গাছ ভেঙে পড়ায় রবিবার বিকেল ৩টা থেকে জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। রাত ১১টার দিকে জেলা শহরের বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হয়। কিন্তু সোমবার সকাল ১১টা পর্যন্ত গাইবান্ধা শহরের মহিলা এতিমখানা এলাকায় সরবরাহ চালু হয়নি। পাশাপাশি জেলা শহরের আশপাশের এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হয়নি।
এ প্রসঙ্গে গাইবান্ধা বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ-১ এর নিবাহী প্রকৌশলী মো. আবদুল মোন্নাফ জানান, রবিবার রাতে শহর এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হয়েছে। গ্রামাঞ্চলে মেরামত কাজ অব্যাহত রয়েছে।