মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম, ডাটা কার্ড এবং বিশেষ সিলমোহর প্রকাশ করেছে ডাক অধিদফতর।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার আজ শনিবার ঢাকায় তার দফতরে ১০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক ডাকটিকিট, ১০ টাকা মূল্যমানের একটি উদ্বোধনী খাম অবমুক্ত করেন এবং পাঁচ টাকা মূল্যমানের একটি ডাটাকার্ড ও একটি বিশেষ সিলমোহর প্রকাশ করেন। মন্ত্রী দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিবৃতি দিয়েছেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম ও ডাটাকার্ড ঢাকা জিপিওর ফিলাটেলিক ব্যুরো এবং পরে দেশের অন্যান্য জিপিও এবং প্রধান ডাকঘর থেকে সংগ্রহ করা যাবে।
মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণের সুবর্ণজয়ন্তী ১৭ এপ্রিল ইতিহাসের একটি অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণার পর ১০ এপ্রিল এ সরকার গঠনের ঘোষণা দেয়া হয়। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলা গ্রামে মুজিবনগর সরকার শপথ গ্রহণ করে এবং মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে বৈদ্যনাথতলা গ্রামের নামকরণ করা হয় মুজিবনগর। মুজিবনগর সরকার ১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী বিবৃতিতে বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৩ বছরের সংগ্রামের পথ বেয়ে আমাদের অর্জিত স্বাধীনতার ইতিহাসে ১৭ এপ্রিল একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক।’
মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘১০ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপ্রধান ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক করে সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ঘোষণা করা হয়। ১৭ এপ্রিল এই সরকার শপথ গ্রহণ করে। এই সরকার সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপরাষ্ট্রপ্রধান এবং বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তাকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপ্রধান ও সশস্ত্র বাহিনীর অস্থায়ী সর্বাধিনায়ক নির্বাচিত করে। তাজউদ্দীন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীকে অর্থমন্ত্রী, খন্দকার মোশতাক আহমেদকে পররাষ্ট্র, আইন এবং সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী, এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে স্বরাষ্ট্র, কৃষি, ত্রাণ এবং পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ গঠন করা হয়। চারজন মন্ত্রীকে ১২টি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব ভাগ করে দেয়া হয়।’
মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘মুজিবনগর সরকার গঠিত না হলে আমরা আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্নতাবাদী বা বিদ্রোহী হয়ে পড়তাম। ফলে মুজিবনগর সরকারের বিভিন্ন কার্যাবলী পর্যালোচনা করলেই বোঝা যাবে কত ব্যাপক এবং সুসংগঠিত ছিল এই সরকারের কর্মসূচি এবং গঠন কাঠামো।’
অধ্যাপক এম ইউসুফ আলী ১০ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের সিদ্ধান্ত ও এর ধারাবাহিকতায় ১৭ এপ্রিল মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলায় মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।’