স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেছেন, আগামী মাসে ২০ লাখ ডোজ টিকা দেবে ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট।
রোববার স্বাস্থ্য অধিপ্তরের নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
মহাপরিচালক বলেন, যেহেতু টিকা শেষ হওয়ার আগেই আমরা পাচ্ছি, সুতরাং কোনো সংকট হবে না। আর গণটিকাদানের প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের কার্যক্রমও আমাদের চলবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেছেন, অপরদিকে চীন উপহার হিসেবে বাংলাদেশকে সিনোফার্মের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা সিনোভ্যাকের ৫ লাখ ডোজ উপহার দিচ্ছে। চীন সিনোফার্মের তৈরি ৫ লাখ ভ্যাকসিন বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে দেবে বলে জানিয়েছে। ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মহাপরিচালক এর অনুমোদন দিয়েছেন। এটি গ্রহণ করার পর আমাদের যারা নীতি-নির্ধারক আছেন, তারা সিদ্ধান্ত নেবেন কখন কীভাবে টিকাগুলো প্রয়োগ করা হবে।’
এর আগে ভারতের করোনা পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতি হওয়ায় বাংলাদেশকে প্রতিশ্রুতি মোতাবেক টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। এমনকি এ বিষয়ে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত ‘কূটনৈতিক বার্তা’পাঠানো হয়েছে। বার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে, কূটনৈতিক তৎপরতার পরও ভারতের চলমান পরিস্থিতিতে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন ‘কোভিশিল্ড’প্রতিশ্রুত সময়ে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ভারতে প্রতিদিন তিন লাখের বেশি নতুন রোগী শনাক্ত হচ্ছে। যেখানে প্রকোপ বেশি সেখানে হাসপাতালে জায়গা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অক্সিজেন সংকট রয়েছে এবং স্বাস্থ্যসেবার অবস্থা খুবই নাজুক।
একটি সূত্র জানায়, সেরাম ইন্সটিটিউট প্রতিমাসে ৬০ থেকে ৭০ মিলিয়ন ডোজ টিকা উৎপাদন করছে। ভারত বায়োটেক করছে ৫ থেকে ১০ মিলিয়ন। এর বিপরীতে প্রতিদিন টিকা নিচ্ছে প্রায় তিন মিলিয়ন। বর্তমানে ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বে যারা শুধু তারই টিকা নিতে পারবেন। তবে ১ মে থেকে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সবাইকে টিকা দেওয়া হবে। বর্তমান যে চাহিদা রয়েছে, ১ মে থেকে তা অনেক বৃদ্ধি পাবে। কারণ, পরিস্থিতি খারাপ দেখে অনেকেই এখন টিকা নেওয়ার জন্য আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
কিন্তু ভারতে করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ার কারণে টিকা রপ্তানি বন্ধের বিষয়ে রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন মহলের চাপ আছে। তাছাড়া ভারতে টিকার বিষয়টি দেখভাল করছে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি।
উল্লেখ্য, সেরাম ইন্সটিটিউট থেকে ৩০ মিলিয়ন ডোজ টিকা কেনার জন্য বাংলাদেশ চুক্তির পর অগ্রিম অর্থ প্রদান করে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, প্রতিমাসে ৫০ লাখ করে জুন মাসের মধ্যে তিন কোটি ডোজ টিকা দেওয়ার কথা সেরামের। কিন্তু এখন পর্যন্ত মাত্র দেড় কোটি ডোজের বিপরীতে মাত্র ৭০ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহ করেছে।