পদ্মায় স্পিডবোট ডুবির ঘটনায় সোমবার বিকেল ৪টায় উদ্ধার অভিযান শেষ হয়েছে। সব মিলিয়ে মোট ২৬ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। এদের মধ্যে ২৫ জন শনাক্ত হয়েছে। বাকি একজনের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।
নিহতদের মধ্যে খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার বারুখালির মনির মিয়া (৩৮), হেনা বেগম (৩৬), সুমী আক্তার (৫) ও রুমি আক্তার (৩), ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার চরডাঙা গ্রামের আরজু শেখ (৫০), ইয়ামিন সরদার (২), মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার সাগর ব্যাপারী (৪০), কুমিল্লা দাউদকান্দির কাউসার আহম্মেদ (৪০), রুহুল আমিন (৩৫), মাদারীপুর জেলার রাজৈরের তাহের মীর (৪২) ও কুমিল্লা তিতাসের জিয়াউর রহমান (৩৫), মাদারীপুরের শিবচরের হালান মোল্লা (৩৮), শাহাদাত হোসেন মোল্লা (২৯), বরিশাল তেদুরিয়ার আনোয়ার চৌকিদার (৫০), মাদারীপুর রায়েরকান্দি মাওলানা আব্দুল আহাদ (৩০), চাঁদপুর জেলার উত্তর মতলব মো. দেলোয়ার হোসেন (৪৫), নড়াইল লোহাগড়া রাজাপুর জুবায়ের মোল্লা (৩৫), মুন্সিগঞ্জ সদর সাগর শেখ (৪১), বরিশাল মেহেন্দিগঞ্জ সায়দুল হোসেন (২৭), রিয়াজ হোসেন (৩৩), ঢাকা পিরেরবাগ খেরশেদ আলম (৪৫), ঝালকাঠি নালসিটি এসএম নাসির উদ্দীন (৪৫), বরিশাল মেহেন্দিগঞ্জের মো. সাইফুল ইসলাম (৩৫), পিরোজপুর চরখামা মো. বাপ্পি (২৮), পিরজপুর ভান্ডারিয়া জনি অধিকারী (২৬)।
জানা গেছে, সোমবার সকাল ৬টার সময় শিমুলিয়া থেকে কমপক্ষে ৩১ জন যাত্রী নিয়ে শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটের উদ্দেশে রওনা দেয় একটি স্পিডবোট। কাঁঠালবাড়ী ঘাটের কাছে এলে নোঙর করে রাখা একটি বাল্কহেডের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে ঘটনাস্থলেই ২৫ যাত্রী ও হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়। জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ৫ জনকে।
দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে নিহতদের স্বজনেরা আসতে শুরু করে শিবচরের পদ্মার পাড়ে। তাদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠে পদ্মাপাড় ও সংলগ্ন মরদেহ রাখার স্থান।
নাজমুল নামে নিহত একজনের ভাই বলেন, সকালে ঢাকা থেকে ভাই বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছিল। স্পিডবোটে ওঠার আগে কথা হয়েছিল। পরে আর খোঁজ পাইনি। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে শিবচরের পদ্মার পাড়ে এসে ভাইকে শনাক্ত করি।
আনোয়ার হোসেন নামে নিহত একজনের ছোট ভাই সোহাগ কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘ভাই বাড়ি আসবে আজ। রওনা দিয়েও ফোন দিয়েছিল। ভাই বাড়ি ফিরেছে। তবে লাশ হয়ে। ‘
শিবচর উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, নিহত ২৬ জনের মধ্যে ২৫ জনের মরদেহ শনাক্ত হয়েছে। ২৫ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি একজন এখনো শনাক্ত হয়নি। বিকেল ৪টার দিকে উদ্ধার অভিযান স্থগিত রাখা হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় মঙ্গলবার আবারো অভিযানে নামবে।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, মরদেহগুলো এখনো হস্তান্তর চলছে।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। যারা দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। এ দুর্ঘটনায় যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের প্রত্যেক পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।