মাদারীপুরের বাংলাবাজার ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌরুটে লকডাউনসহ যে কোন সময় নৌযান চলাচলের নিষেধাজ্ঞা এলেই উভয়ঘাটের নৌ-পুলিশকে ম্যানেজ করে ট্রলার ও স্পিডবোটে যাত্রী পারাপার করতো ঘাট এলাকার প্রভাবশালী একটি মহল। সম্প্রতি এই নৌরুটে স্পিডবোট দুর্ঘটনায় ২৬ জনের মৃত্যুতে টনক নড়েছে প্রশাসনের। তবে নৌ-পুলিশের দাবি, এসব অনিয়মের সঙ্গে তাদের কোন সম্পৃক্ততা নেই।
গেলো ৩ মার্চ বাংলাবাজার শিমুলিয়া নৌ-রুটে স্পিডবোট দুর্ঘটনায় ২৬ জন মারা যায়। তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে প্রশাসন। এ ঘটনায় ৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। এরই মধ্যে একের পর এক অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে নৌ-পুলিশের বিরুদ্ধে।
লকডাউনসহ নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা এলেই উভয়ঘাটের নৌ-পুলিশকে টাকা দিয়ে স্পিডবোটে যাত্রী পারাপার করতো একটি মহল। এসময় কোন বোটের চালক যদি নৌ-পুলিশকে টাকা না দিতো একটু গড়িমসি করতো। এরপর আটকে দেয়া হতো তাদের বোট। আদায় করা হতো টাকা।
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে স্পিডবোটে যাত্রী পার করতে গিয়ে অকালেই ঝড়ে গেলো ২৬টি তাজা প্রাণ। যে নৌ-পুলিশের যোগসাজসে দিনে ও রাতে অবাধে চলতো এই সব স্পিডবোট, তাদের সঙ্গে বোট মালিকদের রয়েছে গোপন সখ্যতা। আবার তাদের উপরেই স্পিডবোট দুর্ঘটনার মামলার তদন্তভার দেয়ায় জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, নিহতদের পরিবার আদৌ কি পাবে ন্যায়বিচার।
মাদারীপুরের চরজানাজাত নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (আইসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, অল্প সংখ্যক জনবল নিয়ে নৌ-পুলিশের একেকটি ফাঁড়ি। আমাদের নিজস্ব কোন জলযানও নেই। জেলা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে থেকেই আমাদের কাজ করতে হয়।
নৌ-পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞাকালে বোট চলাচলের সঙ্গে আমাদের কোন প্রকার সংশ্লিষ্টতা নেই। নৌ-পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনিয়মের বিরুদ্ধে বেশ কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। তার পরেও যদি নৌ-পুলিশের কোন সদস্য এই অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে যায়, তার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ অবশ্যই ব্যবস্থা নিবে।