করোনা পরিস্থিতির কারণে সারা দেশে চলছে সরকারঘোষিত কঠোর নিষেধাজ্ঞা। আকাশপথে উড়োজাহাজ ছাড়া রেলপথে ট্রেন, নৌপথে লঞ্চ ও সড়কপথে দূরপাল্লার গাড়ি চলছে না। তবু থেমে নেই ঘরমুখী মানুষের স্রোত।
স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই। ঠেলাঠেলি-গাদাগাদির এক অনিশ্চিত যাত্রা। গন্তব্য আপন নীড়। প্রাণের মায়া তুচ্ছ করে ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, প্রাইভেট কারে চড়ে মানুষ ছুটছেই। কারো কাঁধে ব্যাগ, কেউ বস্তা তুলেছে মাথায়। সঙ্গে পরিবার-পরিজন। হাঁটছে মাইলের পর মাইল। গত কয়েক দিনের মতো ঈদকে সামনের রেখে ঘরমুখী মানুষের এই ঢল আজ বুধবার (১২ মে) বেড়েছে কয়েক গুণ।
মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরিঘাট এলাকায় জড়ো হতে দেখা গেছে হাজার হাজার যাত্রীদের। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই ভিড় আরো বাড়ছে।
এদিকে, শেষ সময়ে এসে ঢাকার সীমানা পার হলে কোথাও কোথাও সরাসরি দূরপাল্লার বাসও চলছে। কেউ মানতে চাইছে না বাস চলাচলের জেলার সীমানা। এক জেলার বাস ঢুকছে আরেক জেলায়।
শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে গতকাল থেকে স্বাভাবিক নিয়মে চলাচল করছে সবকটি ফেরি। গতকাল সকাল থেকে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাট থেকে ১৫টি ফেরি যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করছে। তবে এতে যাত্রী পারাপার সহজ হলেও হেঁটে ঘাটে পৌঁছতে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
পাটুরিয়া ঘাট থেকেও দৌলতদিয়ার পথে ছেড়েছে একের পর এক ফেরি। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে ঘরমুখী মানুষকে পড়তে হয়েছে ভোগান্তিতে। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকার সুযোগে বিভিন্ন যানবাহনের চালকরা যাত্রীদের পকেট কাটছেন ইচ্ছামতো। কোনো কোনো ক্ষেত্রে চার থেকে পাঁচ গুণ ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবারও যাত্রীদের ফেরির জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। কিন্তু আজপরিস্থিতি ভিন্ন।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সকাল থেকে জনস্রোত সামলাতে শিমুলিয়া ঘাটে বসানো হয়ছে চেকপোস্ট। সেখানে বিজিবি সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। তবুও মানুষের ঢল থেমে নেই। সরকারি বিধি-নিষেধ অমান্য করার কারণ হিসেবে নানা যুক্তি দেখাচ্ছেন ঘরমুখী যাত্রীরা। ফেরিঘাটের আশপাশে থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই জেলে নৌকাসহ ট্রলারে পদ্মা পার হওয়ার চেষ্টা করছেন যাত্রীরা তাদের সবার গন্তব্য গ্রামের বাড়ি।
বিআইডাব্লিউটিসির শিমুলিয়া ফেরিঘাটের উপমহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘১৬টি ফেরির মধ্যে আজ ১৩টি চলাচল করছে। তবে ঘাটে নদী পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে পণ্যবাহী ৪ শতাধিক গাড়ি। কোনোভাবেই জনস্রোত ঠেকানো যাচ্ছে না’।