স্টাফ রিপোর্টার : নগরের গণপরিবহনের মধ্যে প্রায় আড়াই হাজার বাস রয়েছে। এসব বাস বর্তমানে ২৯১টি রুটে চলাচল করে। আগামী বছরের মধ্যেই বাস রুট রেশনালাইজেশন কার্যক্রমের মাধ্যমে এসব বাস ২২টি কোম্পানির মাধ্যমে পরিচালনা করার প্রাথমিক প্রস্তাবনা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করোপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। মঙ্গলবার সকালে নগর ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনয়ন ও যানজট নিরসনে ‘বাস রুট রেশনালাইজেশন’ কমিটির ১৩তম সভায় ডিএসসিসি মেয়র এ কথা বলেন।
মেয়র বলেন, ‘আজকে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির কাছে একটি প্রাথমিক রিপোর্ট প্রদান করা হয়েছে। সেই রিপোর্ট আমরা পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা করেছি। বর্তমানে ঢাকা শহরে ২৯১টি রুটে দুই হাজার ৫০০ বাস চলাচল করছে। সেগুলোকে সন্নিবেশ করে ৪২টি রুট এবং ২২টি কোম্পানি করার প্রাথমিক প্রস্তাবনা করা রয়েছে। এই প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন হলে বর্তমান বাস মালিকরা কোম্পানিগুলোর শেয়ারহোল্ডার হবেন।’
বাস রুট রেশনালাইজেশন বাস্তবায়নের মাধ্যমে আন্তঃজেলা বাসগুলোকে আর ঢাকা মহানগরের মধ্যে ঢুকতে দেয়া হবে না জানিয়ে মেয়র তাপস বলেন, ‘বাইরের বাসগুলোকে ঢাকা শহরের সীমান্তবর্তী এলাকায় নির্ধারিত আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে যাত্রী নামিয়ে তাদের নির্ধারিত গন্তব্যে চলে যাবে। তারপর সেসব টার্মিনাল হতে সিটি সার্ভিস বা এমআরটি বা সেবা প্রদানকারী বাহনের মাধ্যমে যাত্রীরা নিজ গন্তব্যে যাতায়ত করবেন। এতে ঢাকা শহরের উপর গাড়ির চাপ কিছুটা হলেও কমবে।’
আগামী ৮ ডিসেম্বর কমিটির পরবর্তী সভা আহ্বান করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে কমিটির অংশীজনরা (কমিটির সদস্যগণ) ডিটিসিএ এর সহযোগিতায় নিজেদের মধ্যে বসে এই প্রতিবেদনের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার-বিশ্লেষণ করে প্রস্তাবিত ক্লাস্টার রুটগুলো আরও সুনির্দিষ্ট করবেন। সকলের সহযোগিতায় এবং সমন্বয়ের মাধ্যমে ক্লাস্টার রুটগুলোকে চূড়ান্ত করতে পারলে তা এই কার্যক্রমে একটি বড় অগ্রগতি হবে বলে আমি মনে করি।’
উত্তর সিটি করোপোরেশনের মহাখালী ও গাবতলী এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের শুধু সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল আছে জানিয়ে ডিএসসিসি মেয়র আরও বলেন, ‘টার্মিনালগুলোতে বাসগুলোর সংকুলান হয় না, ফলে বাসগুলোকে বিভিন্ন জায়গায় রাস্তায় উপর রাখা হয়। এ কারণে বড় ধরনের যানজট সৃষ্টি হয়। এই বিষয়গুলো আমরা আজকের সভায় বিবেচনা করেছি। ডিটিসিএ কর্তৃক নিযুক্ত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল স্থাপনের জন্য যে জায়গা প্রস্তাবনা করেছে তার সম্পূর্ণ একটি সমীক্ষা আগামী মার্চ মাসের মধ্যে শেষ করবে। তারপর আমরা পরবর্তী ধাপে আমাদের কার্যক্রম নিয়ে যেতে পারব।’
বৈঠকে উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে সংযুক্ত ছিলেন। এছাড়া কমিটির সদস্যদের মাঝে ডিএমপি পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম, বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার, বিআরটিসির চেয়ারম্যান এহসানে এলাহী, রাজউক চেয়ারম্যান সাঈদ নূর আলম, বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির সদস্য সচিব ও ডিটিসিএ এর নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আরিফুর রহমান, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এস এম সালেহ উদ্দীন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আজমাল উদ্দিন আহমদ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।