অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে তরুণদের চাকরির পেছনে না ছুটে মৎস্য উৎপাদনের মতো আত্মকর্মসংস্থানমূলক খাতে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাছের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যেও যুবসমাজকে এগিয়ে আসতে বলেছেন তিনি।
শনিবার বাংলাদেশ আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের ১৮ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় এ আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
সরকারপ্রধান বলেন, তার সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে বর্তমানে মৎস্য খাতে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে শিক্ষিত তরুণরা নিজেরাই মৎস্য খামার করে আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারেন। এই খাতে কাজ করার জন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি পুষ্টির যোগান নিশ্চিত করতে যুব সমাজকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান, তাদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি, জলাধার সংস্কার ও সংরক্ষণ এবং মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির পদক্ষেপ নিয়েছে। একই সঙ্গে সরকার গবেষণার ওপর জোর দিয়ে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে মাছের উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের পদক্ষেপে খাল-বিল, জলাধার সমূহ সংস্কারের ফলে মাছের উৎপাদন বর্তমানে ২৭ লাখ মেট্রিক টন থেকে বেড়ে প্রায় ৫০ লাখ মেট্রিক টনের কাছাকাছি হয়েছে। এছাড়া ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশ প্রথম।
মাছকে পুষ্টির নিরাপদ উৎস হিসেবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, একজন মানুষের দৈনিক ৬০ গ্রাম মাছের চাহিদার বিপরীতে সরকার বর্তমানে ৬২ গ্রাম নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প গড়ে তুলে সেখানকার পণ্য বাজারজাতকরণের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। মৎস্যজীবীদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ দেওয়ার পাশাপাশি তাদেরকে বিনা পয়সায় খাদ্য ও চাল দেওয়া হয়ে থাকে। এছাড়া মৎস্যজীবীরা যাতে কোনও আর্থিক কষ্টে না পড়েন সে লক্ষ্যে তাদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের পর বর্তমানে পুষ্টি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে এখন আর কেউ পুষ্টিহীনতায় ভুগছে না। খাদ্যতালিকায় শুধু ভাত নয়, বরং মাছ, সবজি, তরিতরকারি এবং ফলমূলসহ পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
মৎস্যজীবী লীগকে আরও শক্তিশালী করার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যে আদর্শ ও নীতি নিয়ে জাতির পিতা বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিলেন, সেই আদর্শ ও নীতি নিয়েই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে এবং বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলবে।