রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তাকে দাফন করা হয়। এর আগে, সকাল ১০টায় তার মরদেহ সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের জন্য বাংলা একাডেমিতে নেয়া হয়। সেখানে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে নেয়া হয় আজিমপুর কবরস্থানে, সেখানে দ্বিতীয় দফা জানাজা শেষে দাফন হয়।
সোমবার রাত ১১টার দিকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান হাবীবুল্লাহ সিরাজী।
গত ২৬ এপ্রিল পাকস্থলীর সমস্যার কারণে ওই হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। পরদিন ২৭ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে অস্ত্রোপচার করে তার শরীর থেকে একটি টিউমার অপসারণ করা হয়। এরপর থেকেই তিনি আইসিউতে ছিলেন।
পিয়াস মজিদ জানান, মঙ্গলবার হাবীবুল্লাহ সিরাজীর মরদেহ সর্বস্তরের শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের জন্য বাংলা একাডেমিতে আনা হবে।
হাবীবুল্লাহ সিরাজীর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। গণমাধ্যমে পাঠানো এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, হাবীবুল্লাহ সিরাজী কবিতা ও কর্মে মুক্তিযুদ্ধ এবং প্রগতিশীলতাকে তুলে ধরেছেন যা পাঠকমহলে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী ১৯৪৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর ফরিদপুরে জন্ম গ্রহণ করেন। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবে তিনি যোগদান করেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল ও কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭০ সালে স্নাতক পাস করেন এই কবি।
তার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ৩২। এছাড়া উপন্যাস, শিশুতোষ গ্রন্থ, প্রবন্ধ, স্মৃতিকথা মিলিয়ে অর্ধ শতাধিক গ্রন্থের লেখক তিনি। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে আছে- দাও বৃক্ষ দাও দিন, মোমশিল্পের ক্ষয়ক্ষতি, মধ্যরাতে দুলে ওঠে গ্লাশ, নোনা জলে বুনো সংসার, সিংহদরজা, বেদনার চল্লিশ আঙুল, কতো কাছে জলছত্র, কতোদূর চেরাপুঞ্জি, সারিবদ্ধ জ্যোৎস্না, বিপ্লব বসত করে ঘরে, কাদামাখা পা, যমজ প্রণালী।
হাবীবুল্লাহ সিরাজী ২০১৬ সালে একুশে পদক লাভ করেন। এছাড়া ১৯৯১ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারসহ দেশি-বিদেশি অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন তিনি।