ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে ৩ থেকে ৪ ফুট উচ্চ জোয়ারে পটুয়াখালীতে বেড়িবাঁধ উপচে প্লাবিত হয়েছে উপকূলের ২১ গ্রাম।
মঙ্গলবার সকালে জোয়ারে কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের ৬ কিলোমিটার অরক্ষিত বেড়িবাঁধ, রাঙ্গাবালী উপজেলার চরআন্ডা, দক্ষিণ চরমোন্তাজ ও চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের প্রায় ১০ কিলোমিটার বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে।
এছাড়াও বেড়িবাঁধের বাইরের সকল চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল ৩ থেকে ৪ ফুট জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
জেলার কলাপাড়ার লালুয়ায় বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৪ ফুট উচ্চ জোয়ারের পানি প্রবেশ করে পশরবুনিয়া, ধনজুপাড়া, চৌধুরী পাড়া, নাওয়া পাড়া, ছোট পাঁচ নং, বড় পাঁচ নয়, ১২নং হাওলা, হাসনা পাড়া, মঞ্জু পাড়া, মুন্সী পাড়াসহ ১০টি গ্রাম পুরোপুরি প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পরেছে ওই সব গ্রামের প্রায় ৮ হাজার মানুষ।
এ ছাড়া রাঙ্গাবালী উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের বেড়িবাঁধের বাইরের সকল নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলসহ চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরআন্ডা, নয়াচর, উত্তর চরমোন্তাজ, চরবেষ্টিত, মোল্লা গ্রাম, ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের চরনজির, কোড়ালীয়া, কাউখালীচর, চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের মরাজাঙ্গী, চিনাবুনিয়া, বিবির হাওলা, গোলবুনিয়া, চরলতা প্লাবিত হয়ে সহস্রাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
এদিকে কলাপাড়ার নীলগঞ্জের ইউনিয়নের বিধ্বস্ত নীচকাটা স্লুইস ভেঙে যে কোনো সময় প্লাবিত হতে পারে অন্তত ১২টি গ্রাম। এতে পানিবন্দী হওয়ায় শঙ্কায় রয়েছে ১২ হাজার মানুষ।
এতে ওই সব এলাকার মানুষের রান্নাসহ স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়ে পড়েছে। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। কয়েকশ পুকুর ও ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে। রাতের জোয়ের আরও পানির চাপ বাড়তে পারে বলে শঙ্কায় রয়েছেন ওই এলাকার মানুষ।
লালুয়া ইউপি চেয়ারম্যান শওকত হোসেন তপন জানান, লালুয়া ইউনিয়নের ৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ দীর্ঘদিন ধরে অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে।
চালিতাবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুর রহমান জানান, চালিতাবুনিয়া একটি ভাঙন কবলিত এলাকা। অনেক আগেই বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়েছে। নতুন করে বেড়িবাঁধ না করায় জোয়ারের পানিতে একটি গ্রাম বাদে সবগুলো গ্রাম প্লাবিত হয়ে মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
চরমোন্তাজ ইউপি চেয়ারম্যান হানিফ মিয়া জানান, জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি হলেই চরআন্ডার অরক্ষিত বেড়িবাধ পানি প্রবেশ করে লোকালয় তলিয়ে যায়। মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে।
দুর্গত এসব মানুষের নিরাপদ আশ্রয়সহ খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাঙ্গাবালি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসফাকুর রহমান ও কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক।