বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

হেফাজতের আমির বাবুনগরী, মহাসচিব কাসেমী

নিউজ ডেক্স:
  • প্রকাশিত সময় : রবিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২০
  • ৪১২ পাঠক পড়েছে

স্টাফ রিপোর্টার : হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির নির্বাচিত হয়েছেন আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। সংগঠনটির মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন ঢাকার জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল হেফাজতের ঢাকা মহানগর শাখার আমির নূর হোসাইন কাসেমী। আজ রোববার দুপুর আড়াইটার কিছু আগে ঘোষণা দেন বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের (বেফাক) মহাসচিব হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা মাহফুজুল হক। আজ রোববার প্রয়াত আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফির উত্তরসূরী নির্বাচনের জন্য সম্মেলন ছিল হেফাজতের। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় হাটহাজারীর দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসায় সম্মেলন শুরু হয়। সারা দেশের কওমি অঙ্গনের ৩৭০ জন শীর্ষ নেতৃত্ব সম্মেলনে উপস্থিত হন। আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর ৫৯ দিন পর কওমি অঙ্গনের শীর্ষ সংগঠন হেফাজতের প্রথম কেন্দ্রীয় সম্মেলন (কাউন্সিল) অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সিনিয়র নায়েবে আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ্ বাবুনগরী। এদিকে, হেফাজতের আজকের এই সম্মেলনের বিরোধিতা করছে হেফাজতের আল্লামা শফীপন্থীরা। গতকাল শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই সম্মেলনের বিরোধিতা করে বক্তব্য রাখেন হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মঈনুদ্দিন রুহী। আল্লামা শফীকে পরিকল্পিতভাবেহত্যাকরা হয়েছে বলে দাবি করেন শফীপন্থীরা। হেফাজতের নতুন আমির জুনায়েদ বাবুনগরী দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষা সচিবের দায়িত্বে রয়েছেন। ২০১৩ সালের মে শাপরা চত্ত্বরের সমাবেশের পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তিনি মুক্তি পান। বাবুনগরী ১৯৫৩ সালের অক্টোবর চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থানার বাবুনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বছর বয়সে তিনি আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগরে ভর্তি হন। এরপর ১০ বছর আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলামে শিক্ষা লাভ করেন। ২০ বছর বয়সে তিনি পাকিস্তানের জামিয়া উলুমুল ইসলামিয়াতে চলে যান। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাশ করার পর তিনি হাদিস বিষয় পিএইচডি (তাখাচ্ছুছাত) সম্পন্ন করেন। শিক্ষা জীবন সমাপ্ত করে জুনায়েদ বাবুনগরী চট্টগ্রামের আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগরে শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন। এরপর ২০০৩ সালে তিনি দারুল উলুম হাটহাজারীতে চলে আসেন। পরবর্তীতে তিনি এই মাদ্রাসার সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব পান। ২০২০ সালের ১৭ জুন মাদ্রাসা কমিটি সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব থেকে বাবুনগরীকে অব্যাহতি দেয়। তার স্থলে মাদ্রাসার জ্যেষ্ঠ শিক্ষক শেখ আহমদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে তার অনুসারীরা বলছেন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার, দাবি আদায়ে কঠোর অবস্থানে থাকায় সরকারি চাপে তাকে সরানো হয়েছে। পরবর্তীতে তিনি মাদ্রাসার শায়খুল হাদিস শিক্ষা সচিব হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। এর আগে ২০১০ সালে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি এর মহাসচিব নিযুক্ত হন। অন্যদিকে হেফাজতের নতুন মহাসচিব নূ হোসাইন কাসেমী ঢাকার জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল। তিনি ১৯৪৫ সালের ১০ জানুয়ারি, রোজ শুক্রবার কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ থানার চড্ডা নামক গ্রামে এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। গ্রামের স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা শুরু করার পর চতুর্থ শ্রেণি শেষ করে চড্ডার কাশিপুর মাদরাসায় ভর্তি হন। সেখানে মুতাওয়াসসিতাহ জামাত পর্যন্ত পড়েন। তারপর তিনি বড়ুরার মাদ্রাসায় হেদায়াতুন্নাহু জামাত শেষ করেন। এরপর ভারতের সাহারানপুর জেলার বেড়ীতাজপুর মাদরাসায় জালালাইন জামাত পড়েন। কাসেমী এরপর দারুল উলুম দেওবন্দে তিন বছর শিক্ষালাভ করেন। দাওরায়ে হাদিস সমাপ্ত করার পর তিনি তাকমীলে আদব, তাকমীলে মাকুলাত, তাকমীলে উলুমে আলিয়া জামাতেও অধ্যয়ন করেন। নূর হুসাইন কাসেমী ভারতের উত্তরপ্রদেশে মুজাফফরনগর শহরে অবস্থিত কাসেম নানুতুভি কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত মুরাদিয়া মাদরাসায় এক বছর অধ্যাপনা করেন। এরপর ১৯৭৩ সালের শেষ দিকে শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া থানার নন্দনসার মুহিউস সুন্নাহ মাদরাসায় শায়খুল হাদীস প্রিন্সিপাল পদে যোগদান করেন। ১৯৭৮ সালে ঢাকার ফরিদাবাদ মাদরাসায় যোগদান করে চার বছর শিক্ষকতা করেন। এখানে তিনি দীর্ঘদিন দারুল ইকামাহএর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮২ সালে কাজী মুতাসিম বিল্লাহ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগে তিরমিযী শরীফ পড়াতে থাকেন। এখানে বছর শিক্ষকতা করার পর ১৯৮৮ সাল থেকে অধ্যাবধি পর্যন্ত জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা এবং ১৯৯৮ সাল থেকে অধ্যাবধি জামিয়া সুবহানিয়ার শায়খুল হাদীস অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন। নূর হোসাইন কাসেমী ১৯৭৫ সালে জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৯০ সালে তিনি জমিয়তের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে চলে আসেন। তিনি নভেম্বর ২০১৫ সালে জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের মহাসচিবের দায়িত্ব লাভ করেন। ১৯৯০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত তিনি খতমে নবুয়ত আন্দোলনের সাথে যুক্ত হন এবং সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন

নিউজটি শেয়ার করে আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © 2019-2020 । দৈনিক আজকের সংবাদ
Design and Developed by ThemesBazar.Com
SheraWeb.Com_2580