চট্টগ্রামে বজ্রপাতে এক দিনেই প্রাণ হারিয়েছেন চারজন। নিহতদের মধ্যে ফটিকছড়ির দু’জন নারী শ্রমিক এবং মিরসরাইয়ের একজন স্কুলছাত্র রয়েছে। অন্যজন বোয়ালখালীর দিনমজুর। এ ছাড়া ফটিকছড়িতে বজ্রাঘাতে আরও দুই নারী আহত হয়েছেন।
রোববার সকাল ১০টার দিকে তিন ইউনিয়নে বজ্রপাতে তারা প্রাণ হারান বলে সমকালের উপজেলা প্রতিনিধিরা জানান। এদিকে, পাবনায় বজ্রপাতে এক কলেজছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে।
ফটিকছড়ির কাঞ্চননগরে মানিকপুর ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ডলুপাড়ায় বাড়ির পাশে মরিচ ক্ষেতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে চার নারী আহত হন। তাদের উদ্ধার করে কাঞ্চননগর আব্দুল মনা এম চৌধুরী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে দু’জনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
নিহতরা হলেন- বানুশ্বর দাশের স্ত্রী লাকি দাশ (৩৮) এবং মৃত যোগেন্দ্র শীলের স্ত্রী ভানু শীল (৪০)। আহত হয়েছেন মনতোশ দাশের স্ত্রী মালতী রানী দাশ (৫০) এবং ভুবন দের স্ত্রী শোভা রানী দে (৪৫)। স্থানীয় ইউপি সদস্য মুহাম্মদ আবছার উদ্দিন এ তথ্য জানান।
একই সময়ে মিরসরাই উপজেলার পূর্ব ডোমখালী এলাকার কৃষক মোশারফ ও তার ছেলে সাজ্জাদ ফসলের মাঠে কাজ করছিলেন। এ সময় বজ্রাঘাতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় কিশোর সাজ্জাদ। মোশারফকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। সাহেরখালী ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল হায়দার চৌধুরী জানান, সাজ্জাদ কমরআলী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে পড়ত।
বোয়ালখালীতে বজ্রপাতে মো. জাহাঙ্গীর (৩৯) নামে এক দিনমজুরের মৃত্যু হয়েছে। সকালে উপজেলার জ্যৈষ্ঠপুরা পাহাড়ের গরজংগিয়া এলাকায় লেবু বাগানে কাজ করার সময় এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোকারম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, পাবনায় বজ্রপাতে যুথী খাতুন (১৮) নামে এক কলেজছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। রোববার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সদর উপজেলার মালঞ্চি ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। তিনি পাইকেল গ্রামের নজরুল ইসলামের মেয়ে। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বিকেলে বাড়ির পাশে আমবাগানে বৃষ্টির মধ্যে আম কুড়াতে গিয়েছিলেন যুথী।
নিহতের বাবা নজরুল ইসলাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, মেয়েকে কত কষ্ট করে পড়াশোনা করিয়েছি, তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছি, মানুষের কাছে গর্ব করেছি- আমার মেয়ে এসএসসি পাস করে কলেজে ভর্তি হয়েছে। আজ সব স্বপ্ন মাটি হয়ে গেল। একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেলাম।
তার মৃত্যুতে বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা ও শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন কয়রাবাড়ী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সাইফুল ইসলাম, সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. জিল্লুর রহমান।
পাবনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বজ্রপাত ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই সে মারা যায়। মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।